সুনামের সুযোগে দইয়ের ওজনে ঝন্টু ঘোষের ফাঁকি!
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৪৫
সুনামের সুযোগে দইয়ের ওজনে ঝন্টু ঘোষের ফাঁকি!
নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

পিরোজপুরের নাজিরপুরের শ্রীরামকাঠী বন্দরের ঝন্টু ঘোষের দৈইয়ের সুনাম উপজেলাসহ জেলার বাইরেও ছড়িয়েছে। আর এ সুযোগে দইয়ের ওজনে চলছে ঝন্টু ঘোষের ফাঁকি! কৌশলের আশ্রয় নিয়ে প্রতি পিস মাটির হাড়িসহ দই কেজি হিসেবে বিক্রি করছেন দোকানিরা। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাস্তবে প্রতি কেজি মাটির হাড়িসহ দৈইয়ে সাড়ে পাঁচশ’ থেকে সাড়ে ছয়শ’ গ্রাম দই থাকছে। কয়েক বছর আগে সাড়ে সাতশ’ থেকে সাড়ে আটশ’ গ্রাম পর্যন্ত দই থাকলেও ক্রমে কমে আসছে পরিমান কিন্তু বেড়েই চলেছে দাম।


সরেজমিন ঘুড়ে দেখা গেছে, দই-মিষ্টি বেচা-বিক্রির জন্য গড়ে তোলা হয়েছে নামি-দামি অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রতিষ্ঠানগুলোকে গ্লাসে ঘেরা ঘরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে দইয়ের পসরা। এসব দই গুণে-মানে ও স্বাদে অতুলনীয় তবে দইয়ের পাত্রের গায়ে উৎপাদনের তারিখ ও নিট ওজন লেখা থাকার নিয়ম থাকলেও এসবের কোন তোয়াক্কা না করেই চলছে এ রমরমা ব্যবসা।


রমজান মাসে রোজাদারদের দই ও চিরা দিয়ে ইফতার করা যেন পরিপূর্ণ তৃপ্তির ঢেকুর আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এ সাজ-সজ্জার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে ওজনে কম দিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে ক্রেতাদের সঙ্গে। ৫ থেকে ৬ শত গ্রাম দই দিয়ে বিক্রেতারা হাতিয়ে নিচ্ছেন এক কেজির দাম। ক্রেতারাও সরল বিশ্বাসে কেজি হিসেবে দাম দিয়ে কিনে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন। দিন যতো যাচ্ছে, মাটির হাড়ি ভরা দইয়ের ওজন ততোই কমে আসছে বলেও অভিযোগ অনেকের।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানের কর্মচারীরা আগের ধারাবাহিকতায় প্রতি পিস মাটির হাড়ি ভড়া দই প্রতি কেজি হিসেবে ক্রেতাদের কাছে বিক্রির বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেছেন।


কুমোর শিল্পিরা এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘নামি-দামি প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা কুমোর শিল্পীদের কাছে অর্ডার দিয়ে দই ভরানোর হাড়ি বানিয়ে নেন। হাড়ির আকার বড় দেখালেও গভীরতা অনেক কম থাকে। এ ধরনের হাড়ি অনেক কম দইয়ে ভরে যায়। একেক সময় মালিকেরা একেক মাপের হাড়ির অর্ডার দেন। আর ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কুমোর শিল্পীরাও মালিকদের অর্ডার অনুসারে হাড়ি তৈরি করে দেন’। এসব কর্মচারীরা আরও বলেন, ‘বছরের পর বছরের ধরে মাটির হাড়ি হিসেবে দই বিক্রি হয়ে আসছে। হাড়িগুলো মাটির তৈরি হওয়ায় ওজন করে দেখার সুযোগ কম’।


আর কেউ ওজন করে নিতে চাইলে তার কাছে দই বিক্রি করা হয় না। ফলে ক্রেতারা আগের নিয়মেই দই কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে ক্রেতারা ঠকছেন, লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, ‘নাম দিয়ে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রতিষ্ঠানের কোন কিছু আসবে যাবে না, আপনাদের যা খুশি তাই করতে পারেন।


এবিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পিরোজপুর জেলার সহকারি পরিচালক দেবাষীশ রায় জানান, দইয়ের হাড়িতে উৎপাদন তারিখ এবং হাড়ি ছাড়া দইয়ের নিট ওজন লেখা থাকতে হবে। এর আগেও একবার আমরা অভিযান চালিয়েছি অতি শীগ্রই আবার এ অভিযান পরিচালনা করব।


বিবার্তা/মশিউর/ মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com