এবার কুড়িগ্রামে ১ টাকার রেস্টুরেন্ট, খুশি হতদরিদ্র মানুষ
প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:৪৯
এবার কুড়িগ্রামে ১ টাকার রেস্টুরেন্ট, খুশি হতদরিদ্র মানুষ
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঢাকা, কক্সবাজারের পর এবার কুড়িগ্রামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবার চালু হয়েছে এক টাকার রেস্টুরেন্ট। এক টাকায় শহরের রেস্টুরেন্টের খাবার পেয়ে খুশি হতদরিদ্র মানুষেরা।


এক টাকার এই রেস্টুরেন্টে পাওয়া যাচ্ছে বিরায়ানী, পোলাও, ভাত, মাছ, মাংস, ডিমসহ ১২ পদের খাবার। ক্ষুধার্ত মানুষরা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ইচ্ছেমতো তাদের পছন্দের খাবার খেতে পারছেন। মনোরম ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসে তৃপ্তি সহকারে পছন্দের খাবার খেতে পেরে খুশি সুবিধাভোগীরা।


সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের আধুনিক ঘরোয়ানা এই রেস্টুরেন্টটি খাবারের মনোরম এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে পেশাদার বাবুর্চি, রেস্টুরেন্ট স্টাফ, মেন্যু কার্ড এবং বাহারি পুষ্টিকর খাবার। রেস্টুরেন্টটিতে ৫০ জন মানুষ বসে খেতে পারবে।



রেস্টুরেন্টটিতে সুবিধাভোগী ছকিনা বেগম বলেন, এক টাকার রেস্টুরেন্টে নাতি-নাতনি, বিয়াইন, বোনসহ আসছি। হামরা গ্রামের মানুষ কোন দিন চিন্তা করতে পারি নাই যে রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খামো। আজকে এক টাকায় পেট ভরে খেতে পেরে সবাই খুশি হয়েছে।


সুবিধাভোগী বৃদ্ধ কাশেম আলী বলেন,বাবা মোর বয়স মেলা হইছে। কোন দিন টাকার অভাবে বড় বড় হোটেলে খাবার খেতে পারি নাই। চা-বিস্কুট ৫টাকা দিয়ে খাইছি। এখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় সেটাও হয় না। কিন্তু বউসহ এসে এক টাকায় এমন দামী খাবার খেতে পারব ভাবতেই পারিনি। এক টাকায় মনমতো খেতে পেরে খুব খুশি হয়েছি বাবা।


সুবিধাভোগী বুলবুলি আক্তার বলেন,বাচ্চা নিয়ে এসেছি এক টাকার হোটেলে। ভাত, মাছ, মাংস, ডিম, সালাদ, ফল, মিস্টি খেলাম। কামলা দেয়া সংসারে শহরের হোটেলে গেলে কম করে হলেও ৪/৫‘শ টাকা খরচ হতো। কিন্তু এখানে এক টাকায় খেতে পেরে স্বপ্নই মনে হচ্ছে।



স্বেচ্ছাসেবক হৃদয় বলেন, আজ জীবনে প্রথমবারের মতো রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করছি। সেটিও বিনা পয়সা। এতে হোটেলে ওয়েটার ও বাবুর্চিসহ কর্মচারীদের কষ্ট উপলব্ধি করতে পারছি। সত্যি আমি বেশ গর্বিত প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জন্য এমন কষ্ট করতে পেরে।


স্বেচ্ছাসেবক প্রধান আকরাম হোসেন বলেন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দরিদ্র, এতিম, অসহায়দের খুজে বের করে তাদের টোকেন দেয়। পরে তারা এসে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সুবিধা নেন।


বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ প্রধান সালমান খান ইয়াছিন বলেন, বর্তমানে সপ্তাহে দুই দিন এই রেস্টুরেন্টের কার্যক্রম চলবে। তবে এই কাজে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে প্রতিদিন করার পরিকল্পনা আছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ মানুষ এই রেস্টুরেন্ট থেকে সেবা দেয়া সম্ভব। কুড়িগ্রামে এই রেস্টুরেন্ট একটি মডেল মাত্র। দেশের বিভিন্ন দরিদ্র এলাকায় এই ধরনের কার্যক্রম চালু করা গেলে ক্ষুধায় মানুষের কষ্ট থেকে মুক্তির পাশাপাশি পুষ্টিজনিত রোগ থেকে মুক্তি মিলবে।


বিবার্তা/বিপ্লব/জামাল

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com