মানব ইতিহাসের ভয়ংকরতম যুদ্ধের একটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। ১৯১৪ সালে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ স্থায়ী হয় ১৯১৮ সাল পর্যন্ত। প্রাণ হারায় প্রায় দেড় কোটি মানুষ, যাদের অর্ধেকই ছিল সাধারণ নাগরিক। শতবর্ষ আগের সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ্ব সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক কিছু অজানা তথ্য:
● ময়দানে যখন শত্রুপক্ষ আর মিত্রপক্ষের যুদ্ধ চলছিল ঠিক তখন একদল সৈনিক খুব গোপনে শত্রুপক্ষের পরিখাগুলোর নিচে টানেল খুড়তে ব্যস্ত। প্রায় ১০০ ফুট নিচ দিয়ে এইসব টানেল খোড়া হয়েছিল বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে। বেলজিয়ামের মেসিন রিজে প্রায় নয় লক্ষ পাউন্ডের এক্সপ্লোসিভ ফাটানো হয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে শত্রুপক্ষ একেবারে পর্যদুস্ত হয়ে পরে। আর সেই বোমা ফাটার আওয়াজ শোনা গিয়েছিল ১৪০ মাইল দূরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিট থেকেও!
● প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সাংবাদিকদের জন্য মোটেই সুখের ছিল না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক সাংবাদিক যুদ্ধক্ষত্রের সংবাদ সংগ্রহ করছিল। তবে ব্রিটিশ সরকার ব্যপারটা মোটেই ভালো চোখে দেখেনি, তাদের মনে হয়েছে এই তথ্য শত্রুপক্ষের জন্য সুবিধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর তাই যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। নিষেধ অমান্য করলে শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত!
● প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১২ মিলিয়ন চিঠি পাঠানো হত রণক্ষেত্রে। যুদ্ধশেষ হতে হতে মোট সংখ্যাটি দাঁড়ায় প্রায় ২০০ কোটি!
● যুদ্ধ মাঝেমাঝে কিছু কিছু গবেষণা ত্বরান্বিত করে। এই যেমন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে বিজ্ঞানী ও শৈল্যচিকিৎসক হ্যারন্ড গিলিস যুদ্ধাহত সৈনিকদের ক্ষত ও অঙ্গহানি দেখে মর্মাহত হন। বিকৃত হয়ে যাওয়া মুখমণ্ডল ও অন্যান্য ক্ষত সারানোর জন্য তিনি প্লাস্টিক সার্জারির ধারণার প্রভূত উন্নতি সাধন করেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়।
● ব্লাড ব্যাংকেরও প্রভূত উন্নতি ঘটে যায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়টায়। সৈনিকরা নিয়মতি রক্তদানে অভ্যস্থ হয় এইসময়। লাখ লাখ আহত মানুষের জীবন রক্ষায় যা অনেক বড় ভূমিকা রাখে।
● প্রথম বিশ্বযুদ্ধ অনেকটাই হয়েছিল পরিখায়। মূলত এই পরিখায় যুদ্ধ হবার জন্যই অনেক সৈনিকের প্রাণ বেঁচে গিয়েছিল। প্রতি ১০ জন ব্রিটিশ সৈনিকের ৯ জনই বেঁচে ফিরতে পেরেছিল এই যুদ্ধের ময়দান থেকে।
● যুদ্ধের দামামা বাজতেই দলে দলে দেশপ্রেমিক জনতা সৈনিকের কাতারে নাম লেখায়, যাদের অনেকেই ছিল কম বয়সী। সবচেয়ে কম বয়সী ব্রিটিশ সৈন্যর বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর, তার নাম সিডনি লুইস। এই রকম হাজারো তরুণের আত্মত্যাগেই এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
বিবার্তা/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]