সকালের নাশতা বিক্রেতা থেকে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের গতিতারকা হারিস রউফ
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ২১:৫৯
সকালের নাশতা বিক্রেতা থেকে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের গতিতারকা হারিস রউফ
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্যে আতঙ্কের নাম পাকিস্তানি পেসার হারিস রউফ। সর্বশেষ এশিয়া কাপেও ওভারপ্রতি ২-৩টা করে বল ১৫০-এর বেশি গতিতে করেছেন। যেখানে তার জন্য সর্বনিম্ন গতির বল ১৪৫। পাকিস্তানের বোলিং বিভাগের অন্যতম সেরা অস্ত্র রউফ, যার হাতে ইনিংসের শুরু কিংবা শেষেও বল তুলে দিতে দ্বিধা করেন না অধিনায়ক। কিন্তু জাতীয় দলে তার আগমনটা এমন সুখকর ছিল না। এক সময়ের নাস্তা বিক্রেতা থেকে কীভাবে কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছেন, তিনি নিজেই সেই গল্প শুনিয়েছেন।


বিশ্বকাপের আগে ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রামাণ্যচিত্র ‘ইনক্রেডিবল রাইজ অব হারিস রউফ’–এ এসব তথ্য ওঠে এসেছে।


তথ্যচিত্রে রউফ বলেছেন, ম্যাট্রিকের পর আমি বাজারে গিয়ে খাবার বিক্রি করতাম খরচ জোগানোর জন্য। রবিবার এই কাজটা করতাম। তাতে আমার পড়াশোনা আর একাডেমির খরচটা ওঠে আসত।


এরপর রউফ কীভাবে টেপ-টেনিস বলের ক্রিকেট খেলে অর্থ উপার্জন করেছেন সেটাও জানিয়েছেন। টেনিস বলে টেপ জড়িয়ে ম্যাচ খেলার বেশ প্রচলন রয়েছে। যার ব্যতিক্রম নয় পাকিস্তানও।


এ নিয়ে রউফ বলছেন, আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখন আমার বাবা সেরকম কিছু উপার্জন করতেন না। ফলে আমার বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না তার পক্ষে। আমিও সেরকম উপার্জন করছিলাম না। তারপর আমি টেপ-টেনিস ক্রিকেট খেলা শুরু করি। যার মাধ্যমে সহজেই ফি দিতে পারতাম। টেপ টেনিস ক্রিকেট খেলে পাকিস্তানে ক্রিকেটাররা দুই থেকে আড়াই লাখ রুপি পর্যন্ত আয় করতে পারেন। আমিও এমন আয় করতাম, আর টাকা মায়ের হাতে দিতাম।


নিজেদের একেবারে খারাপ সময়ের কথাও জানাতে ভুললেন না ২৯ বছর বয়সী এই পেসার। তিনি বলেন আমার বাবার তিন ভাই ছিল। কাকাদের বিয়ের পরে বাবা তার ঘরটা ছেড়ে দেন। এমন অবস্থা দাঁড়ায় যে, আমরা একটা সময় রান্নাঘরে ঘুমাতাম।


জাতীয় দলে তার জায়গা পাওয়ার সুযোগটা আসে ২০১৭ সালে। সে সময় রউফ লাহোর কালান্দার্সের ট্রায়ালে অংশ নেন এবং কোচ আকিব জাভেদের চোখে পড়েন। আকিবই মূলত বদলে দিয়েছেন হারিসকে। সেই ট্রায়াল থেকে তার যাত্রা শুরু।


ট্রায়াল থেকে নজরে আসার প্রসঙ্গে হারিস বলেছেন, ট্রায়ালে যারা ঘণ্টায় ৮৩ থেকে ৮৪ মাইল গতিতে বল করছিলেন, তাদের নির্বাচন করা হচ্ছিল। কিন্তু আমি যখন বল করি, প্রথম বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ৮৮ মাইল। তাহির মুঘল (কোচ) ভেবেছিলেন স্পিড মেশিনে কোনো সমস্যা আছে। তিনি আকিব ভাইকে ডাক দেন। আকিব ভাই আমাকে বল করতে বলেন, দ্বিতীয় বলটা করলাম ৯০ মাইল গতিতে। যখন আবার বোলিং করতে বললেন, তৃতীয় বলটা করলাম ৯২ মাইল গতিতে।


এ নিয়ে প্রামাণ্যচিত্রে আকিব বলেছেন, যখন দেখেছি একজন প্রতিভাবান তরুণ ঘণ্টায় ৯২ মাইল গতিতে বল করছে। তখনই মনে হয়েছে যে উদ্দেশ্যে ট্রায়াল করা, সেটা পেয়ে গেছি।


রউফের সঙ্গে শাহিন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহদের পেসারত্রয়ী যেকোনো দলের ব্যাটিংয়ের জন্য আতঙ্ক ছড়াতে যথেষ্ট। তবে আসন্ন বিশ্বকাপের আগে নাসিম ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়ায় সেই সুবিধা নিতে পারছে না পাকিস্তান।


২০২০ সালে জানুয়ারিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয়েছিল রউফের। এরপর ভারতের মাটিতে হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপেও তার দিকেই সবার নজর থাকবে। এখন পর্যন্ত ২৮ ওয়ানডেতে ৫৩ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন রউফ।


বিবার্তা/পুলক/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com