শিরোনাম
টুম্পাহত্যার নেপথ্যে শুধুই 'সন্দেহ'
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:৩৩
টুম্পাহত্যার নেপথ্যে শুধুই 'সন্দেহ'
খলিলুর রহমান
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় নিজ কর্মস্থলে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছিলেন রোকসানা আক্তার টুম্পা। তবে কে বা কারা কী কারণে তাকে ছুরিকাঘাত করেছিল সেটা জানা ছিল না কারও। অবশেষে সেটা উদঘাটন করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।


আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, রোকসানা আক্তার টুম্পাকে হত্যা করেছে তার স্বামী সবুজ শেখ (২৯)। যশোরের একটি হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


সবুজ জানিয়েছে, টুম্পা ছিল তার দ্বিতীয় স্ত্রী। ভোলা সদর উপজেলার কাঠালী গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার হাজারীর মেয়ে টুম্পার সাথে তার প্রেম ছিল। কিন্তু সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি টুম্পার পরিবার। তারা ফুপাতো ভাইয়ের সাথে তার বিয়ে ঠিক করে। এ সময় সবুজও পরিবারের পছন্দে বিয়ে করে আর পাশাপাশি টুম্পার সাথে গোপন সম্পর্ক বজায় রাখে। ছয় মাস পরে এক পর্যায়ে টুম্পা তার পিতা-মাতার অমতে সবুজকে বিয়ে করে।


টুম্পা সবুজের প্রথম স্ত্রীকে মেনে নিয়েই বিয়ে করেছিল। তবে কিছুদিন যেতেই তারা ছোটখাট বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য ও বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে টুম্পা সবুজকে ডিভোর্স দেয়। আবার কিছুদিন পর তারা মান-অভিমান ভুলে গিয়ে কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে এবং রাজধানীর মিরপুর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে বাস করতে থাকে। এ সময় সুবজ শপার্স ওয়ার্ল্ডে এবং টুম্পা মিরপুরের একটি বুটিকস ফ্যাশনে বিক্রয়কর্মী হিসেবে যোগদান করে।


কিছু দিন সুখের সংসার করার পর সবুজ ফের টুম্পাকে সন্দেহ শুরু করে। ফের শুরু হয় অশান্তি। এক পর্যায়ে টুম্পা বুটিকস ফ্যাশন থেকে চাকুরি ছেড়ে মোহাম্মদপুরে সবুজের চাচাতো ভাই নাসিরের দোকানে যোগদান করে। সেখানেও নাসিরের সাথে টুম্পার সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সবুজ। এ নিয়ে তাদের দাম্পত্যজীবন মারাত্মক রুপ ধারণ করে। গত রবিবার সকালে সবুজ টুম্পার কর্মস্থলে গিয়ে এসব বিষয় মীমাংসার কথা বলে। এ সময় দু’জন বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সবুজ একটি চাকু দিয়ে টুম্পাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।


এদিকে, ঘটনার পর দিন টুম্পার বাবা আবুল বাশার হাজারী রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় সবুজকে আসামি করে একটি হত্যামামলা করেন। পরে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবও ওই মামলার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে এবং মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে যশোরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে সবুজকে গ্রেফতার করে।


এ ব্যাপারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, সবুজ প্রথমে পল্টনে আত্মগোপন করে। সেখান থেকে যাত্রাবাড়ি হয়ে চট্টগ্রাম যায়। পরবর্তীতে সে ভারত পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে যশোরে এস আর হোটেল নামের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে। সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


বুধবার সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাফিজুর রহমান জানান, সবুজকে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে নেয়া হবে এবং রিমান্ড আবেদন করা হবে।


উল্লেখ্য, সবুজ শেখ পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বরইবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত মুনসুর আলী শেখের ছেলে।


বিবার্তা/খলিল/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com