ঢাবির হলগুলোতে রমজানে খাবারের দাম আকাশচুম্বী
প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৫২
ঢাবির হলগুলোতে রমজানে খাবারের দাম আকাশচুম্বী
ওমর ফারুক
প্রিন্ট অ-অ+

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এর আবাসিক হলগুলোতে রমজান মাসে সেহেরির খাবার আকাশচুম্বী দামে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু খাবারের মানোন্নয়নে ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮টি আবাসিক হল রয়েছে। রমজানের শুরু থেকেই প্রত্যেক হলে খাবারের দাম চড়া- এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গত বুধবার (২৯ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হলগুলোর ক্যান্টিনে খাবারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং মানোন্নয়নের লক্ষ্যে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা।


সরেজমিন হলগুলোতে দেখা যায়, রাতে ও সেহেরির খাবারের পরিমাণ একই হলেও দামে ক্ষেত্রে রয়েছে ব্যাপক ফারাক। সেহেরিতে একই পরিমাণ খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে- কিন্তু দাম বাড়নো হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। এতে বাড়তি টাকার জোগান দিতে সাধারণ শিক্ষার্থীর ভোগান্তি বাড়ছে ।


হাজী মোহাম্মদ মহসিন হলের ক্যান্টিনে দেখা যায়, গরু ও ভাত ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, মুরগির মাংসের ভুনা ও ভাত ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, রুই মাছ ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকায়। ক্যান্টিনের তুলনায় অপেক্ষাকৃত হলের দোকানগুলোতে মান ও পরিমাণ বেশি হলেও সেখানে খাবার দাম সন্তোষজনক না। একই অবস্থা বিরাজ করছে ঢাবির অন্যান্য হলগুলোতেও।


শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইউসুফ বিবার্তাকে বলেন, রোজা যত যাচ্ছে, হলের ক্যান্টিনগুলোতে খাবারের মান ততই হ্রাস পাচ্ছে। এসব মানহীন অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে সারাদিন রোজা রেখে ক্লাস করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে।


জসিম উদদীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জুবায়ের বিবার্তাকে জানান, আমাদের ক্যান্টিনের খাবার অনেক নিম্নমানের এবং মানের তুলনায় দাম অনেক বেশি। বিশেষ করে সেহেরির সময়ে খাবারের দাম অদ্ভুত ভাবে বেড়ে যায়। আগের তুলনায় দাম একটু কমলেও মানের বিবেচনায় দাম এখনো অনেক বেশি। আমরা খাবারের দাম কমানো এবং মান ভালো করার দাবি জানাই প্রশাসনের কাছে।


হাজী মুহাম্মদ মহসিন হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সালমান বলেন, ক্যান্টিনে খাবারের মান বৃদ্ধিতে প্রশাসন চাইলে ব্যবস্থা নিতে পারত, কিন্তু প্রশাসনের বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নাই।


বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শোভা বিবার্তাকে বলেন, সেহেরির সময় খাবারের দাম অটোমেটিক বেড়ে যায় কিন্তু খাবারের মান ও পরিমাণ একই থাকে। সেহেরিতে যদি খাবারের মান এবং আইটেম বাড়ানো যায়, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতো।


কবি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারজানা বিবার্তাকে জানান, হলের খাবার দাম আগের মত আছে কিন্তু রমজান উপলক্ষ্যে খাবারের মান অনেক নিম্নমানের।


হাজী মোহাম্মদ মহসিন হলের ক্যান্টিন মালিক আলমগীর বলেন, বাজারে জিনিসপত্রের দামের যে ঊর্ধ্বগতি- আমরা তো নিরুপায় হয়ে গেছি। এজন্যই সবকিছু চড়া দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।


জহুরুল হক হলের ক্যান্টিন মালিক হাবিব বিবার্তাকে জানান, কি আর করব ভাইজান! আমাগোও বাজারের দামের সাথে সংগতি রেখেই দাম নির্ধারণ করতে হয়। বাজারে যে আকাশচুম্বী দামে সব বিক্রি হচ্ছে আমরাও তো অপারগ হয়ে গেছি কম দামে খাবার বিক্রি করতে।


শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রহিম বিবার্তাকে বলেন, আমি বাজার ভিজিট করেছি। জিনিসের দাম বাজারেও বেশি। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করতেছি খাবারের মানোন্নয়ন ও দাম সন্তোষজনক অবস্থায় রাখার জন্য। সেহরিতে খাবারের দাম একটু বেশি হলেও মানে ও পরিমাণ একটু বেশি রাখার চেষ্টা করতেছি।


হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান বিবার্তাকে জানান, খাবারের দাম ও মান নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য চেষ্টা করছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের দোকানগুলোর তুলনায় আমরা খাবার দাম অনেক কম রাখছি। তিনি আরো বলেন, ছাত্রদের আর্থিক সংগতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সর্বোচ্চ পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।


বিবার্তা/ওমর ফারুক/রোমেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com