পবিত্র হজের অন্যতম ওয়াজিব বিধান হলো জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা। শয়তানকে উদ্দেশ করে হজযাত্রীরা তিনটি স্থানে কঙ্কর নিক্ষেপ করেন। যদিও এই তিনটি স্থানে শয়তান বিদ্যমান নেই, কিন্তু হজযাত্রীদের কঙ্কর নিক্ষেপণ দেখে শয়তান অপমানে জ্বলতে থাকে।
১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনায় গিয়ে তিনটি স্থানে কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয়—১. জামারাতুল আকাবা (শেষ জামারা) ২. জামারাতুল উস্তা (মধ্যম জামারা) এবং ৩. জামারাতুল উলা (প্রথম জামারা)
জামারাতুল আকাবা মক্কার দিকে মসজিদুল খাইফের সর্ব নিকটবর্তী স্থানে অবস্থিত। একে জামারাতুল উখরা ও কুবরাও বলা হয়। ১০ জিলহজ এখানে তাকবির বলতে বলতে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করে দিতে হয়। কাবাঘর বাঁ দিকে ও মিনা ডান দিকে রেখে দাঁড়ানো সুন্নত। অন্য দুই জামারায় এদিন কঙ্কর নিক্ষেপ করতে নেই।
১১ তারিখে তিন জামারায় (প্রথমে ছোট, এরপর মধ্যম এবং সব শেষে বড় জামারায়) ৭–৩=২১টি পাথর মারতে হয়। ১২ তারিখেও অনুরূপ তিন শয়তানকে ২১টি পাথর মারতে হয়। তিন দিনে সর্বমোট ৭+২১+২১=৪৯টি কঙ্কর মারতে হয়।
এই পাথর নিক্ষেপ মূলত খলিলুল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর প্রতীকী আমল হিসেবে পালন করেন বর্তমান হাজীরা। ইব্রাহিম (আ.) যখন শিশুপুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে কোরবানি করতে নিয়ে যাচ্ছিলেন, শয়তান কুমন্ত্রণা দিচ্ছিল যেন কোরবানি বাধাগ্রস্ত হয়। তখন ইব্রাহিম (আ.) তিন স্থানে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করে বিতাড়ন করেছিলেন এবং আল্লাহর আদেশ পালনে সন্তানকে মাটিতে শায়িত করেছিলেন।
স্মৃতিবিজড়িত সেই ঘটনাকে চিরজাগ্রত রাখার জন্য কঙ্কর নিক্ষেপকে হজের বিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশনা পালন করতে এলে জামরা আকবার কাছে শয়তান তাঁর মুখোমুখি হয়। ইবরাহিম (আ.) সাতটি পাথর নিক্ষেপ করেন। সে জমিনে মিশে যায়। অতঃপর দ্বিতীয় জামরায় এলে তাকে সাতটি পাথর নিক্ষেপ করেন। সে জমিনে মিশে যায়। অতঃপর তৃতীয় জামরায় এলে তাকে ফের সাতটি পাথর নিক্ষেপ করেন। সে জমিনে মিশে যায়। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘তোমরা শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ কর। তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ ইবরাহিম (আ.)-এর রীতিকে অনুসরণ করছ।’ (সহিহ আত তারগিব: ১১৫৬)
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]