বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচনে অতি দ্রুত কমিশন গঠনের দাবি হানিফের
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৩, ২৩:৩০
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচনে অতি দ্রুত কমিশন গঠনের দাবি হানিফের
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচনে অতি দ্রুত তদন্ত কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি ।


তিনি বলেন, অতি দ্রুত তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিচার হয়েছে এবং অনেকের রায় কার্যকর হয়েছে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের কুশীলব হিসেবে কাজ করেছিল খুনি জিয়াউর রহমান, তার মুখোশ উন্মোচন করা হোক। জাতি জানুক এই হত্যাকাণ্ডে কার কী ভূমিকা ছিল।


শনিবার (১৯ আগস্ট) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবতার লঙ্ঘন হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংস হত্যার দিন। পৃথিবীর অনেক দেশে ক্ষমতা দখলের জন্য রাষ্ট্রনায়ককে হত্যার ঘটনা দেখেছি। কিন্তু কোথাও পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যার ঘটনা ঘটেনি। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ক্ষমতার পালাবদলের ঘটনা ছিল না। এটা ছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ।


তিনি বলেন, কিছু বিপথগামী সৈন্যের হাতে বঙ্গবন্ধু নিহত হয়েছেন এ কথাটি সঠিক নয়। একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তান ও তাদের পশ্চিমা মিত্র বাহিনীর যারা আমাদের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি তারা ষড়যন্ত্র করেছে। আর তাদের ষড়যন্ত্রের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা ছিল ভাড়াটে আর তাদের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেছেন জিয়াউর রহমান।


আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে যারা আমাদের সবক দেন। আজকে যারা পশ্চিমা বিশ্বের গণতন্ত্রে ধ্বজাধারী দেশ। গণতন্ত্র শিখাচ্ছেন, মানবতার সবক দিচ্ছেন তাদের কাছে জিজ্ঞাসা কোথায় ছিল আপনাদের মানবতা। যখন পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে তাঁর পরিবারের নারী, শিশুসহ হত্যা করা হয়েছিল। তখন কোথায় ছিল আপনাদের মানবতা। তখন তো মানবতা চোখে পড়েনি। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার আমাদের সিনিয়র নেতাদের হত্যা করেছিল। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের যখন নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করেছিল। তখন তো কিছু বলেননি আপনারা।


তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে দেশের প্রায় ১০ হাজার নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। অজস্র মেয়ে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ১৯ বার হামলা হয়েছিল। কোথায় ছিল আপনাদের মানবতার সংজ্ঞা, আইনের শাসন। আর এখন আপনারা গণতন্ত্র, মানবতার সবক দিতে আসেন। কথায় কথায় গণতন্ত্রের দোহাই দেন।



বাংলাদেশ জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীন হয়েছিল। জাতির পিতার হাতে গড়া দেশ। এই দেশের মালিক দেশের জনগণ। বিদেশি প্রভুরা আপনাদের ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। দেশের জনগণ যতদিন শেখ হাসিনার সাথে আছে ততদিন আপনাদের কোনো প্রভু আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না, বলেন তিনি।


হানিফ বলেন, একজন যুদ্ধাপরাধী কয়েকদিন আগে মারা গেছেন। তাকে কেন্দ্র করে দেখি মির্জা ফখরুল সাহেবরা শোক দিয়েছেন। রাজাকার রাজাকারের পক্ষে কথা বলবে সেটা স্বাভাবিক। এই ফখরুল সাহেবের বাবা ছিল চোখা রাজাকার। রাজাকারের বাচ্চা রাজাকারই হয়। এর বাইরে হওয়ার কিছু নেই। এই বিএনপি পাকিস্তানের প্রেতাত্মা।


তিনি বলেন, রাজাকারের পক্ষ নিয়ে উনারা উসকানি দিচ্ছেন যে তাকে সঠিক চিকিৎসা দেয়া হয়নি। যারা যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার এই বাংলাদেশে বাস করার নৈতিক অধিকার তাদের থাকতে পারে না। শেখ হাসিনার সরকার মানবিক সরকার। যার কারণে তাদের বাস করার সুযোগ দিয়েছেন। আপনারা উসকানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা করতে চান। আপনাদের সেই চেষ্টা সফল হবে না।


আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, মৃত মানুষের ব্যাপারে কথা বলতে নেই কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়াতে গেলে দেখতে পারবেন সকালে এক কথা বলে বিকেলে আরেক কথা বলার রেকর্ডও আছে। তার অজস্র মিথ্যাচারের কথা পাবেন। যারা মিথ্যাচার করে, মিথ্যা কথা বলে মানুষকে ধোঁকা দেয়। ধর্মের দোহাই দেয়, আবার মানুষ হত্যা করে এরা কখনো আল্লাহর নেক বান্দা হতে পারে না এবং ধর্মীয়ভাবে জান্নাত পেতে পারে না। সকল ধর্মে আছে যারা সৎ পথে চলে, সৎ কথা বলে কারো ক্ষতি করে না তাদের জন্য ইহকাল, পরকাল ভালো হবে। মিথ্যাচার আর মানুষ হত্যাকারীদের ইহকাল, পরকাল ভালো হতে পারে না।


হানিফ বলেন, সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে না বুঝে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। ছাত্রলীগকে সজাগ থাকতে হবে। ছাত্রলীগ হচ্ছে এই সমাজের জাগ্রত সমাজ। তাদেরকে দায়িত্ব নিতে হবে। এই সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যাচার করে এদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যারা বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে এদের শক্ত জবাব দিতে হবে।


তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াসহ তাদের অনেক দুষ্কর্ম দেখেছি। আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া দল। বিএনপি নেতারা সরকারের পতন ঘটানোর কথা বলেন। পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই, আওয়ামী লীগকে কেউ কখনো আন্দোলন করে পতন ঘটাতে পারেনি। আওয়ামী লীগের পতন ঘটাতে পারে এমন কোনো শক্তির সৃষ্টি হয়নি। যারা অতীতে বিশৃঙ্খলা করেছিল তাদের স্তব্ধ করে দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, ভবিষ্যতেও এগিয়ে নিয়ে যাবো।


বিবার্তা/সোহেল/ছাব্বির/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com