বসন্তবেলায় ঘুরে আসুন বাংলার তাজমহল
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৩, ০৯:০১
বসন্তবেলায় ঘুরে আসুন বাংলার তাজমহল
পর্যটন ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতে অবস্থিত আগ্রার তাজমহল দেখার ইচ্ছা অনেকের থাকলেও সবার পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয় না। তবে আগ্রার তাজমহল আপনি কিন্তু বাংলাদেশে দেখতে পারেন। ভ্রমণপিপাসু মানুষের দৃষ্টির পরিতৃপ্তির জন্য বাংলার ইতিহাসের প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ের নির্মিত হয়েছে ভারতের আগ্রার তাজমহলের আদলে বাংলার তাজমহল। 


প্রাচীন যুগ ও মধ্যযুগে পৃথিবীতে নির্মিত অতি আশ্চর্যের সাতটি জিনিসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মিসরের রাজা বাদশাহদের মমি ও ভারতের মোগল সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মমতাজ বেগমের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত আগ্রার তাজমহল। মমি আর তাজমহলের আদলে এ স্থাপনাগুলো নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মুক্তিযোদ্ধা আহসানউল্লাহ মনি নিজ গ্রাম পেরাবতে।


বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ১০ মাইল পূর্বে পেরাব, সোনারগাঁয়ে অবস্থিত। এটি প্রকৃত তাজমহলের (ভারতের আগ্রায় অবস্থিত একটি মুঘল নিদর্শন) একটি হুবহু নকল বা রেপ্লিকা।


সম্রাট শাহজাহানের অনুপম ভালোবাসার নিদর্শন আগ্রার তাজমহল। ভালোবাসার অমর নায়ক হিসেবে মধ্যযুগে পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের একটি স্থাপনা রচিত হয়েছিল তার হাত দিয়ে। স্ত্রী মমতাজের ভালোবাসায় সিক্ত সম্রাট ভালোবাসার পিয়াসুদের কাছে আজও অমর।


২০০৩ সালে এর কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বেশ ঘটা করে এর উদ্বোধন করা হয়। সুলতানি আমলের প্রসিদ্ধ সুলতান গিয়াসউদ্দীন আযম শাহ আর বারো ভূঁইয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বীর ঈশা খাঁর রাজধানীখ্যাত সোনারগাঁয়ের এ আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত বাংলার তাজমহল এখন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। তাজমহল সংশ্লিষ্ট জায়গার পরিমাণ প্রায় ১৮ বিঘা। তবে আশপাশে পর্যটনের জন্য প্রায় ৫২ বিঘা জায়গা সংরক্ষিত রয়েছে।


বাংলার তাজমহল আগ্রার তাজমহলের মডেলেই গড়া হয়েছে। তাজমহলের মূল ভবনে স্বচ্ছ ও দামি পাথরে মোড়ানো। 


স্থাপত্যটির ভিতরে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান সেখানে ঢুকলেই প্রথমে চোখে পড়বে ঝর্ণা। যতদূর চোখ যাবে তত দূরেই মিলবে ফুলের বাগান। তাজমহল কে ঘিরে বাইরে  উঠেছে বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রী এবং অন্যান্য মাটিরগহনাসহ আরো বিভিন্ন পণ্য সামগ্রির দোকান সমূহ। এর আশেপাশে অনেক রেস্তোরা, হোটেল, পিকনিক স্পট।


এর অভ্যন্তরে আহসানউল্লাহ্ মনি ও তার স্ত্রী রাজিয়া দুজনের সমাধির স্থান রক্ষিত আছে। চার কোণে চারটি বড় মিনার, মাঝখানে মূল ভবন, সম্পূর্ণ টাইলস করা। সামনে পানির ফোয়ারা, চারদিকে ফুলের বাগান, দুই পাশে দর্শনার্থীর বসার স্থান। 


এখানে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রাজমনি ফিল্ম সিটি, রেস্তোরাঁ, উন্নতমানের খাবার-দাবারের পাশাপাশি, যারা গ্রুপে বা পিকনিকে আসতে চান তাদের জন্য ও ব্যবস্থা রয়েছে।


রয়েছে রাজমনি ফিল্ম সিটি স্টুডিও। ইচ্ছা করলে যে কোনো দর্শনার্থী এখানে ছবি উঠাতে পারবেন। তাজমহলকে ঘিরে বাইরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন হস্তশিল্পসামগ্রী জামদানি শাড়ি, মাটির গহনাসহ আরও অন্য পণ্য


যেভাবে তাজমহলে যাওয়া যাবে


ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ মদনপুর দিয়ে, এশিয়ান হাইওয়ে থেকে প্রায় ২-৩ কিমি. ভেতরে অথবা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর হয়ে রূপগঞ্জের বরপা দিয়েও যাওয়া যেতে পারে। অথবা কুড়িল বিশ্বরোড দিয়ে গাউছিয়া হয়েও যাওয়া যায়।


অর্থাৎ,


১. ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ভৈরব, নরসিংদী কিংবা কিশোরগঞ্জগামী যে কোনো বাসে চলে যেতে হবে বরপা বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে নেমে যে কোন সিএনজিতে কিংবা অটোতে করে তাজমহল দেখতে যেতে পারবেন খুব সহজেই।


২. ঢাকা থেকে সোনারগাঁও অবস্থিত তাজমহলটির দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলোমিটারের। ঢাকার গুলিস্তান থেকে দোয়েল অথবা স্বদেশ পরিবহনে চলে যেতে পারবেন মদনপুর বাস স্ট্যান্ডে। ওই বাস স্ট্যান্ড থেকে সোনারগাঁও তাজমহল টিতে পৌঁছতে ভাড়া লাগবে মাত্র ৬০টাকা।


৩. অন্য একটি উপায় অবলম্বনের মাধ্যমেও যাওয়া যাবে তাজমহল টিতে। ঢাকার ভুলতা বাস স্ট্যান্ড থেকে যেকোনো অটোর ইচ্ছা করে সোনারগাঁও তাজমহলটিতে যাওয়া যেতে পারে। এতে ভাড়া পড়বে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।


বিশেষ পরামর্শ


ছুটির দিনগুলোতে এই দর্শনীয়  স্থানটিতে খুব বেশি ভিড় থাকে। তাই ছুটির দিনগুলো বাদ দিয়ে অন্য যেকোনো দিনে ঘুরে আসতে পারেন এই আকর্ষণীয় স্থানটিতে। এছাড়াও তাজমহলে ঢোকার পূর্বে আপনাকে কেটে নিতে হবে একটি টিকিট যার প্রতি মূল্য ১৫০ টাকা করে। টিকিটের বাকি অংশ ফেলে দিবেন না এটি সাথে থাকলে একে দেখেই আপনি পিরামিডে প্রবেশ করতে পারবেন।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com