শিরোনাম
বিজয়ের আনন্দ, স্বজন হারানোর বেদনা
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ২৩:০৩
বিজয়ের আনন্দ, স্বজন হারানোর বেদনা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে চূড়ান্ত বিজয়ের দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের দিন।


১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে নজিরবিহীন সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। কিন্তু তা সত্বেও তাঁর হাতে ক্ষমতা ছাড়তে চায় না পাকিস্তানী সামরিক চক্র। নানা তালবাহানা করতে থাকে তারা। এদিকে বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ তথা গোটা বাংলার মানুষ বুঝে যায়, পাকিরা কিছুতেই বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা ছাড়বে না। তারা নেমে আসে রাজপথে। স্লোগান তোলে - ''বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর''। জনগণের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক জনসভায় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা দেন - ''এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।'' আরো বলেন, ''ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। যার যা কিছু আছে তা-ই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।''


নেতার এ ভাষণে জনতা দিকনির্দেশনা পেয়ে যায়। এদিকে ২৫ মার্চের কালো রাতে বর্বর পাকি সেনারা ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র জনতার ওপর। তারা বন্দী করে জনতার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধে।


দীর্ঘ নয় মাস বাংলার কৃষক-শ্রমিক-ছাত্রসহ সর্বস্তরের মানুষ রুখে দাঁড়ায় বর্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। ইয়াহিয়া-নিয়াজীর সেনারা এ সময় হত্যা করে ৩০ লাখ মানুষ। কেড়ে নেয় দুই লাখ মা ও বোনের সম্ভ্রম। জ্বালিয়ে দেয় গ্রামের পর গ্রাম। ভেঙে দেয় অবকাঠামো। চালায় বেপরোয়া লুটপাট।


দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র যুদ্ধ শেষে বিজয়ী হয় বাংলাদেশের মানুষ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে।



এদিন কৃতজ্ঞ জাতি সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করবে দেশের পরাধীনতার গ্লানি মোচনে প্রাণ উৎসর্গকারী বীর সন্তানদের। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁরা শহীদের উদ্দেশে নিবেদন করবেন পুষ্পাঞ্জলি। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সব প্রান্তের মানুষ অংশ নেবে বিজয় দিবসে।


বিজয় দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকবে। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোর প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপ জাতীয় পতাকায় সাজানো হয়েছে। রাতে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় করা হবে আলোকসজ্জা। হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানাগুলোতে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে। সংবাদপত্র বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করবে, বেতার ও টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।


প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে একাত্তরের শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবেন।


এ ছাড়া বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, সিপিবি, ওয়াকার্স পার্টি, গণফোরামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ রাজধানীর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করবে।


এর মধ্যে আছে সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া, মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com