শিরোনাম
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চুক্তি হতে পারে আজ
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ১০:২৯
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চুক্তি হতে পারে আজ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারের সেনাদের গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ফেরাতে আজই চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। বুধবার মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিডোয় দুই দেশের সচিব ও মন্ত্রী পর্যায়ে দিনভর বৈঠকের পর সন্ধ্যায় এই চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়েছে।


বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও রাষ্ট্রীয় পরামর্শক অং সান সু চির সাথে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সাক্ষাতের পর চুক্তিটি সই হবে।


রাখাইনে ২৫ আগস্ট তল্লাশিচৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার জেরে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনীর নৃশংসতা শুরুর পর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬ লাখ ২২ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।


সকালে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে যোগ দেন। সকাল থেকে মধ্যাহ্নভোজের আগ পর্যন্ত এ বৈঠক চলে। মধ্যাহ্নভোজের পর মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়। এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। আর মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন সু চির দফতরের ইউনিয়ন মন্ত্রী টিন্ট সোয়ে। দুই মন্ত্রীর দীর্ঘ একান্ত বৈঠকের পর বিকেলে শুরু হয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। বৈঠক শেষে ‘রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত মানুষের প্রত্যাবাসন’ চুক্তি চূড়ান্ত হয়। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি।


নেইপিডোয় অবস্থানরত ইউএনবির প্রতিনিধিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, ‘আমাদের মধ্যে ভালো আলোচনা হয়েছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) এই চুক্তি সই হবে বলে আশা করছি।’


আলোচিত এই চুক্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ১৯৯২ সালের বাংলাদেশ-মিয়ানমার যৌথ ঘোষণার আলোকে বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। এর পর দুই দেশের মধ্যে চুক্তির খসড়া ছয় দফা বিনিময় হয়। এর মাধ্যমে উভয় দেশের মতামতের দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে।


নেইপিডো বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, মিয়ানমার ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চায়। এ সময়ের মধ্যে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। তবে বাংলাদেশ চাইছে বিভিন্ন সময়ে আশ্রয় নেয়া সব রোহিঙ্গাকেই মিয়ানমার ফিরিয়ে নিয়ে যাক, যার সংখ্যা ১০ লাখ ছড়িয়ে গেছে।


রোহিঙ্গাদের পরিচয় যাচাইয়ের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে মতভিন্নতা রয়েছে। মিয়ানমার এককভাবে রোহিঙ্গাদের পরিচয় যাচাই করতে চায়। আর বাংলাদেশ পরিচয় যাচাইসহ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের অন্তর্ভুক্তি চায়। ১৯৯২ সালের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইউএনএইচসিআরের ভূমিকা ছিল। মিয়ানমার শর্ত দিয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হলে বাংলাদেশ এ ইস্যু নিয়ে অন্য কোনো দেশ বা ফোরামে আলোচনা করতে পারবে না। অর্থাৎ রোহিঙ্গা সমস্যাটি কেবল দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করতে হবে, এর আন্তর্জাতিকীকরণ করা যাবে না। কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়নে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ এ শর্ত মানতে নারাজ।


বিবার্তা/ইমদাদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com