রাজধানী ঢাকাসহ দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই করছে। জ্যৈষ্ঠ মাসের এ গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আর এর ফলে ভিড় বাড়ছে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে তীব্র গরমের কারণে গত কয়েকদিনে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি।
এদিকে রাজধানীর মহাখালী আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ডায়রিয়া আক্রান্ত ৫০০ রোগী ভর্তি হচ্ছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালেও জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, রোগী আর স্বজনদের উপচে পড়া ভিড়। তীব্র গরমে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও স্ট্রোকসহ বিভিন্ন রোগে শিশু এবং বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ঢামেক চিকিৎসকরা।
এছাড়াও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালেও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘তীব্র গরমের ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম বের হয়। ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণও বের হয়ে যায়। ফলে শরীরের রক্তচাপ কমে যায়, দুর্বল লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে। যারা বাইরে কাজ করেন, প্রয়োজন মতো পানি পান করার সুযোগ পান না, তারাই মারাত্মক পানিস্বল্পতার শিকার হন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ এবং মূলত বিশুদ্ধ পানির সংকটের কারণেই মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত গরমের কারণে খাবারে দ্রুত পচন ধরছে। সেই খাবার খেয়েও অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। গরমে অতিষ্ঠ মানুষ রাস্তাঘাট ও ফুটপাতে অস্বাস্থ্যকর শরবত পান করেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন।’
নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিতে গিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. আ ম সেলিম রেজা বলেন, ‘বেশি করে বিশুদ্ধ পানিপান করতে হবে। খোলা বা বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। রাস্তা বা ফুটপাতের শরবত এবং এ ধরনের পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সবার ঘরে খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, শিশুদের ঘাম যাতে কম হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। পাতলা জামা-কাপড় পরাতে হবে। ঘাম হলে বার বার সুতির কাপড় বা গামছা দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। খাবারের মেন্যুতে টাটকা শাকসবজি ও ফল রাখতে হবে। ফ্রিজে সংরক্ষিত ফলমূল বর্জনের পরামর্শ দেন তিনি।
বিবার্তা/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]