চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুল প্রত্যাশিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন হচ্ছে আগামীকাল শনিবার। টানেল উদ্বোধন ও প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে এনেছে কর্তৃপক্ষ। নৌকার আদলে যেমন মঞ্চ প্রস্তুত করা হচ্ছে তেমনি ঐতিহাসিক জনসভায় রুপান্তরের আশাবাদ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেল উদ্বোধনের পর আনোয়ারায় কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন।
টানেল উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, খাম ও বিশেষ সিলমোহর অবমুক্ত করবেন। টানেলটি রবিবার থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে বন্দর নগরীতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। চট্টগ্রাম সিটি করপোশেনের (চসিক) উদ্যোগে পুরো নগরীকে পরিপাটি করে তোলা হয়েছে; সাজানো হয়েছে ভিন্ন আমেজে।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগ, অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে নগরী ও আনোয়ারা প্রান্তের রাস্তাঘাট। পতেঙ্গা প্রান্তে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে স্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নান্দনিক ম্যুরাল। জনসভার স্থলে নৌকার আদলে চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ।
দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী এবং বন্দর নগরীর বাসিন্দাদের স্বপ্ন সত্যি হতে যাচ্ছে এ টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম টানেল বাংলাদেশকে বিশ্বে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে।
প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ বলেন, ‘টানেল উদ্বোধনের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। চলছে শেষ মুহূর্তের টুকিটাকি কাজ। দুটি টিউবই প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেল উদ্বোধনের পরদিনই যান চলাচলের জন্য তা খুলে দেয়া হবে।’
টানেল উদ্বোধনের বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘২৮ অক্টোবর দেশ ও জাতির গর্ব করার মতো একটি দিন। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত বৃহৎ টানেল উদ্বোধন করবেন। বাঙালির এই স্বর্ণালি স্বপ্ন ও প্রত্যাশার প্রাপ্তিযোগ বিএনপি-জামায়াত এবং স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির কিছুতেই সহ্য হচ্ছে না। তাই তারা ওই দিন ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পিতভাবে নাশকতা-অরাজকতার জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে মহাসমাবেশ ডেকেছে।
এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি দেশি-বিদেশি ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির নির্বাচন বানচাল এবং জনগণের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ধ্বংসাত্মক মহড়া।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক অর্থায়ন করেছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। টানেলের পুরো রুটের দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার (৫.৮৩ মাইল)। সুড়ঙ্গটির দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার (২.০৬ মাইল) ও ব্যাস ১০.৮০ মিটার (৩৫.৪ ফুট)। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের নেটওয়ার্ক উন্নততর হবে।
চীনের কোম্পানি চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এটি নির্মাণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা টানেলটির বোরিং ফেজও উদ্বোধন করেন।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]