পাকিস্তানে আকস্মিক তুষারপাত-বৃষ্টিতে অন্তত ৩৫ জনের প্রাণহানি
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪, ১৭:০৪
পাকিস্তানে আকস্মিক তুষারপাত-বৃষ্টিতে অন্তত ৩৫ জনের প্রাণহানি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

পাকিস্তানে সাধরণত শীতকাল স্থায়ী হয় ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত। তারপর থেকে বাড়তে থাকে তাপমাত্রা। মার্চ মাসের শুরু থেকে টের পাওয়া যায় গ্রীষ্মকালের আগমন। অথচ গ্রীষ্মের শুরুতে পাকিস্তানে আকস্মিক তুষারপাত দেখা দিয়েছে।


পাকিস্তানের দুই প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে গত ৩ মার্চ থেকে শুরু হয় আকস্মিক তুষারপাত, বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড় ও হিমশীতল বৃষ্টি। এতে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছে কয়েক ডজন।


দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ২২ জনই শিশু। এর মধ্যে ভূমিধসে নিজেদের ঘরের নিচে চাপা পড়ে কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছে। প্রবল বর্ষণের জেরে দুই প্রদেশে অন্তত ১৫০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ৫০০টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।


৫ মার্চ, মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, পারমাণবিক ক্ষমতাধর পাকিস্তানের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে এই চরম আবহাওয়া পরিলক্ষিত হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় শত শত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


সাধারণত মার্চ মাসে পাকিস্তানের আবহাওয়া আর্দ্র থাকে। এমন সময়ে তুষারপাত ও বৃষ্টিতে অবাক হয়েছে বিশেষজ্ঞরা। গ্রীষ্মের শুরুতে আকস্মিক তুষারপাত, ঝড়বৃষ্টিতে রীতিমতো অবাক হয়েছেন দেশটির আবহাওয়াবিদরাও।


এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন দেশটির জ্যেষ্ঠ জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং আবহাওয়া অধিদফতরের সাবেক পরিচালক মোশতাক আলী শাহ।


মুশতাক আলি শাহ বিবিসিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, গ্রীষ্মের শুরুর দিকে হালকা বর্ষণ বিরল নয়, কিন্তু এ রকম তুষারপাত, ঝড়-বৃষ্টি অভূতপূর্ব। আমরা এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাচ্ছি না। সম্ভবত বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে।


তিনি বলেন, এই সময়ে কিছুক্ষণ শিলা বৃষ্টি হলে তা মানানসই। কিন্তু, আধাঘণ্টার বেশি হলে তা অস্বাভাবিক।


বৈরী আবহাওয়ার কারণে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানের অনেক দুর্গম অঞ্চলে সড়ক ও মোবাইল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অনেক এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই।


খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ক্রিক জেলার বাসিন্দা হাজিত শাহ বলেন, ‘আমাদের এলাকায় তুষারপাত বিরল। আমার জীবনে আমি একবার শুধুমাত্র তুষারপাত হতে দেখেছি। আমার যতটুকু মনে পরে, ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে এমনটি হয়েছিল।’


খাইবার পাখতুনখোয়ার কির্ক জেলার বাসিন্দা হাজিত শাহ (৪০) বিবিসিকে বলেন, আমাদের এলাকায় তুষারপাত বিরল। আমি আমার সারাজীবনে খাইবার পাখতুনখোয়ায় এ নিয়ে মাত্র দুবার তুষারপাত দেখেছি। ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে এমনটি হয়েছিল। এর আগে যখন দেখেছিলাম, তখন আমার বয়স ছিল ১০ বছর। তবে সেবার তুষারপাত হয়েছিল শীতকালে এবং তার পরিমাণ ছিল এবারের তুলনায় অনেক কম।


বেলুচিস্তান প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অতিবৃষ্টিতে সেখানে অন্তত ১৫০ বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ৫০০ বাড়ি। কয়েকদিন ধরে কয়েকটি জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।


সূত্র : বিবিসি


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com