এইচ৩এন২ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভারতে প্রাণ গেল ২ জনের
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৩, ২০:০২
এইচ৩এন২ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভারতে প্রাণ গেল ২ জনের
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতে সম্প্রতি এইচ৩এন২ নামের নতুন একটি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। হরিয়ানা ও কর্ণাটক রাজ্যে ইতোমধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে দু’জন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলেও শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।


এছাড়া ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ৯০ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে। ভারতের চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি এই ভাইরাসটির পরিচয়, সংক্রমণজনিত উপসর্গ, চিকিৎসা ও সংক্রমণ প্রতিরোধে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে সেসব নির্দেশনা প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।


কী এই এইচ৩এন২ ভাইরাস


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রচলিত ইনফ্লুয়েঞ্জা ‘এ’ ভাইরাসেরই একটি উপধরন এইচ৩এন২। এটি মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। মানুষ ছাড়াও অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণী ও পাখিদেরও এই আক্রান্ত করার ক্ষমতা রাখে এইচ৩এন২ ভাইরাস।


উপসর্গসমূহ


এইচ৩এন২ ভাইরাসের সংক্রমণে যে অসুস্থতা দেখা দেয়া দেয়, সাধারণভাবে এটি ‘হংকং ফ্লু’ নামে পরিচিত। এই রোগের উপসর্গগুলোর সঙ্গে প্রচলিত ইনফ্লুয়েঞ্জা ও কোভিডের বেশ সাদৃশ্য আছে। উপসর্গগুলো হলো— কাশি, জ্বর, শ্বসকষ্ট, বুকে কফ জমে জাওয়া, বমি বমি ভাব, গলাব্যথা, শরীরব্যথা এবং ডায়রিয়া (কিছু কিছু ক্ষেত্রে)। সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রেও এসব উপসর্গ দেখা দেয়, তবে ‘হংকং ফ্লু’র ক্ষেত্রে রোগীদের জন্য অনেক বেশি ভোগান্তিকর হয় উপসর্গগুলো।


ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাধারণত ৭ দিন স্থায়ী হয় এসব উপসর্গ। যদি এই সময়সীমার মধ্যে রোগী সুস্থ না হন, কিংবা চিকিৎসা না নেন— সেক্ষেত্রে নিউমোনিয়ার দিকে মোড় নেয় এই ইনফ্লুয়েঞ্জা।


কীভাবে ছড়ায়, আক্রান্ত হন কারা


করোনাভাইরাসের মতোই হাঁচি, কাশি ও কথাবার্তার বলার সময় রোগীর নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ছড়ায় এইচ৩এন২ ভাইরাস। অনেক সময় এই ভাইরাস হাতে লেগে থাকে এবং নাক বা মুখের কাছে সেই হাত নিয়ে গেলেও শ্বাস-প্রঃশ্বাসের মাধ্যমে সেটি মানবদেহে প্রবেশ করে। সাধারণত অন্তঃস্বত্ত্বা নারী, কমবয়স্ক শিশু, বয়স্ক লোকজন এই রোহে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন।


অবলম্বন করতে হবে যেসব সতর্কতা


দেহে এইচ৩এন২ ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গ অনুভূত হলে অক্সিমিটার দিয়ে দেহের অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন আইসিএমআরের বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে যদি দেহের অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ শতাংশের কম হয়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। আর যদি ৯০ শতাংশের নিচে নেমে যায় অক্সিজেনের মাত্রা— তাহলে রোগীকে ভর্তি করতে হবে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে।


সংক্রমণ থেকে বাঁচতে যেসব স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা, সেগুলো অনেকটা করোনার স্বাস্থ্যবিধির মতো; নিয়মিত সাবান বা জীবাণুনাশকের মাধ্যমে হাত পরিষ্কার রাখা, মাস্ক পরিধান, শরীরের আদ্রতা ধরে রাখতে ঘন ঘন পানি পান করা প্রভৃতি।


শরীর ও মাথাব্যাথা উপশম করতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিয়েছে আইসিএমআর। সেই সঙ্গে এই রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চিকিৎসকদের। আইসিএমআর বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার করা হলে হিতে বিপরীত হতে পারে।


বিবার্তা/এমএ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com