পরিবেশ দূষণের কারণে দেশে প্রতিবছর ৫২ হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়। এছাড়া বাংলাদেশে বছরে যত মানুষের মৃত্যু হয় তার ২৮ শতাংশই পরিবেশ দূষণের কারণে হয়।
বিশ্বে বায়ু দূষণে আক্রান্ত শহরগুলোর তালিকায় শুরুর দিকে রয়েছে আমাদের রাজধানী ঢাকা। দিনকে দিন একটু একটু করে বাড়ছে দূষণের মাত্রা। দূষণ থেকে বাঁচতে ঢাকা ছাড়ার ইচ্ছা অনেকেরই।
কিন্তু জীবিকার বিকল্প না থাকায় ছাড়তে পারছেন না। তবে কেউ কেউ আবার দূষণ থেকে বাঁচতে জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের দিকে ঝুঁকছেন।
বায়ূ দূষণ সাধারণত শীতকালে বেশি দেখা যায়। এর ফলে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। প্রতি বছর বায়ু দূষণের ফলে ব্যাপক হারে মানুষের মৃত্যু হয়।
আর সম্প্রতি বায়ু দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব ২০৫০ সালের মধ্যে দ্বিগুণ মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে বলে লিডস ইউনিভার্সিটির সমীক্ষায় জানা গেছে। আর এই দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করবে ভিটামিন ‘সি’, ‘ই’ এবং ওমেগা৩ সমৃদ্ধ খাবারগুলো।
গবেষকরা বলেন, দূষণ এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না হলে ২০৫০ সালের মধ্যে দূষণের ফলে পৃথিবী মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে।
বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় কয়েকটা খাবার যোগ করলে বায়ু দূষণের সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে তারা জানায়।
শীতকাল ছাড়াও যে খাবারগুলো সারা বছর আমাদের খাদ্য তালিকায় যোগ করলে দূষণের প্রভাবে যে ক্ষতি হচ্ছে তা অন্তত হবে না। আসুন জেনে নিই দূষণ থেকে বাঁচাতে পারে এমন কিছু খাবারের নাম-
ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার
টক জাতীয় ফল যেমন কমলালেবু, লেবু ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ভিটামিন ‘সি’এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ খাবার কোষ গঠনে অত্যন্ত সাহায্য করে। উদ্ভিজ্জ ভোজ্য তেল যেমন ক্যানোলা, সূর্যমুখী, জলপাই ইত্যাদি তেল ভিটামিন ‘ই’ এর উৎকৃষ্ট উৎস। এছাড়াও সূর্যমুখী বীজ ও আমন্ড বাদামেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘ই’ থাকে।
ওমেগা ৩ সমৃদ্ধ খাবার
ওমেগা ৩ ফ্যাতি অ্যাসিড বায়ু দূষণের খারাপ প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এর কারণে হার্ট ও লিপিড প্রোফাইলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে ফ্ল্যাক্সসিড, তেলযুক্ত মাছ, রাজমা, বাজরার আটা, মেথি, সবুজ শাকসবজি ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎকৃষ্ট উৎস।
আমলকি
চিকিৎসকদের মতে, আমলকি শরীর থেকে সব দূষিত পদার্থ বের করে দেয়। প্রতিদিন আমলকি খেলে লিভার ভালো থাকে। আমলকির কারণে ধুলাবালি ও ধোঁয়া ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের শরীরের কম পড়ে।
টমেটো
টমেটো’তে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস থাকে, যা দূষণের হাত থেকে রক্ষায় ভূমিকা রাখে। এর ফলে শ্বাসযন্ত্রে দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব কম হয়।
হলুদ
হলুদের গুণাগুণের শেষ নেই। এ ভেষজ শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। হলুদ ও ঘি দিয়ে তৈরি মিশ্রণ হাঁপানি ও কফ দূর করতে সাহায্য করে।
তুলসি
ফুসফুসকে বায়ু দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে তুলসি দারুণ কার্যকর। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিলি তুলসির রস খেলে শরীর সব ধরণের দূষণ থেকে রক্ষা পাবে।
গুড়
চিকিৎসকদের মতে, হাঁপানি ও ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগের ক্ষতিকর প্রভাব দূর করতে গুড় ওষুধের মতো কাজ করে।
গ্রিন টি
শরীর থেকে সব ধরণের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে গ্রিন টি। এজন্য প্রতিদিন ২ কাপ করে গ্রিন টি পান করুন।
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]