
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক কমানোর ঘোষণার পর এখন বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে গড়ে ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। এর মধ্যে নতুন করে আরোপিত ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক এবং আগে থেকেই কার্যকর থাকা সাড়ে ১৬ শতাংশ শুল্ক হার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন বিজিএমইএ সভাপতি।
তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পোশাকের প্রায় ৭৫ শতাংশই তুলার তৈরি। তবে, এসব পোশাকে ব্যবহৃত তুলার বড় অংশই আমদানিকৃত হলেও তা অনেক সময় মার্কিন উৎস থেকে আসে না। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক অব্যাহতির সুযোগ গ্রহণে প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন বিজিএমইএ সভাপতি।
মাহমুদ হাসান খান বলেন, শুল্ক হ্রাস নিঃসন্দেহে স্বস্তির, তবে আত্মতুষ্টির কোনও সুযোগ নেই। কারণ, আমাদের সামনে আরও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা চুক্তিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। একইসঙ্গে মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার বাড়িয়ে শুল্ক অব্যাহতির সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
মার্কিন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিগত চার মাস ধরে অতিরিক্ত শুল্ক আমাদের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ ছিল। এবার যুক্তরাষ্ট্র একটি ভারসাম্যপূর্ণ শুল্ক কাঠামো ঘোষণা করেছে। এটি আমাদের জন্য একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের প্রধান প্রতিযোগীদের মধ্যে চীনের ওপর ৩০ শতাংশ এবং ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর আছে। সে তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন মোটামুটি প্রতিযোগিতামূলক।
রপ্তানিকারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের মার্কিন ক্রেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। মার্কিন কাঁচামাল সংযোজনের সুযোগগুলো খুঁজে বের করতে হবে, যেন আমরা অতিরিক্ত শুল্ক পরিহার করে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারি।
মাহমুদ হাসান খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের তুলা ব্যবহার করে তৈরি পোশাক রফতানি করলে দেশটির আরোপিত অতিরিক্ত ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের আংশিক ছাড় পেতে পারে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৩১ জুলাইয়ের নির্বাহী আদেশে এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাহী আদেশ বিশ্লেষণ করে দেখেছি, যদি অন্তত ২০ শতাংশ আমেরিকান কাঁচামাল; বিশেষ করে তুলা ব্যবহার করা হয়, তাহলে অতিরিক্ত পাল্টা শুল্ক পুরোপুরি প্রযোজ্য হবে না।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিষয়টি নিশ্চিত করতে ইউএস প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস বিভাগও এই ছাড় বাস্তবায়ন করে। এ ধরনের শুল্কছাড় কার্যকর হলে বাংলাদেশের রফতানিযোগ্য পণ্যের উৎপাদন খরচ কিছুটা হ্রাস পাবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের তুলার দামও কমে আসবে।
মাহমুদ হাসান খান আরও বলেন, বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে শুল্কহ্রাস বা বাণিজ্য সুবিধা নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর অন্যান্য নেতা এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির সুযোগ কাজে লাগাতে হলে পোশাক কারখানাগুলোকে দ্রুত কাঁচামালের উৎসবিন্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]