ফেসবুকে আমার আগমন একান্ত অনিচ্ছায়, সে কথা প্রথম দিনই লিখেছি। ফলে প্রায় প্রতিদিনই ফেসবুক ওপেন করলেও এর অনেক কিছু আমার অজানা। তাই আমার ইনবক্সে যে মেসেজ এসে বসে আছে, সেটা পড়ে জবাব দেয়ার বুদ্ধিও আমার মাথায় খেলেনি।
৫ এপ্রিল আমার একটা পোস্টে কমেন্টাঘাত, ''ইনবক্স খোলেন না নাকি...''
কমেন্টকারী আর কেউ নন, কবি ও বহুমাত্রিক লেখক সাযযাদ কাদির। তড়িঘড়ি করে ফোন করলাম, ''সরি সাযযাদ ভাই, আমি আসলে...''
তারপর অনেক কথা হলো। সাযযাদ ভাই জানালেন, ১৪ এপ্রিল তাঁর জন্মদিন। এ উপলক্ষে আমি কি তাঁকে নিয়ে একটা লেখা লিখতে পারি না !
আমার মনটা মোচড় দিয়ে উঠলো। কতো অগাবগাকে চোখের সামনেই কতো কিছু হয়ে যেতে দেখলাম, আর এমন প্রতিভাবান মানুষটির জন্মদিনে কারো খোঁজই নেই !
সাযযাদ ভাইকে নিয়ে লেখার যথার্থ মানুষ আমি আদৌ নই, একথা সর্বান্তকরণে জেনেও ''না'' করতে মন চাইলো না। আমি তো ওনাকে জানি ও বুঝি, আপাদমস্তক শিশুর মতো অভিমানী একজন মানুষ। এই শিশুসুলভ সারল্যের জন্য কতো জন যে সাযযাদ ভাইকে ভুল বুঝেছে, সে তো আমার নিজের চোখেই দেখা।
সারাজীবন জ্ঞানসাধনায় নিবেদিত এই মানুষটি কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি বা পুরস্কার পাননি (ও নিয়ে তাঁকে আফসোস করতেও আমি অন্তত দেখিনি), আজ জন্মদিনে আমার মতো তুচ্ছাতিতুচ্ছ মানুষকে বলছেন ''কিছু'' লিখতে, আমার প্রতি তাঁর এই স্নেহকে আমি এড়িয়ে যাবো? আমি ভয়ে ভয়ে রাজি হলাম।
১৪ এপ্রিল এখনো আসেনি, তার আগেই এলো ৬ এপ্রিল। সাযযাদ ভাই আর নেই।
আজ আমি কম্পিউটারের সামনে বসে কাঁদতে কাঁদতে সাযযাদ ভাইকে নিয়ে এ লেখা লিখছি। কিন্তু আমার তো এ লেখা লেখার কথা ছিল না ! কথা ছিল সাযযাদ ভাইয়ের জন্মদিন নিয়ে লিখবো।
সাযযাদ ভাই, আপনি আমাকে যে লেখাটি লিখতে বলেছিলেন, এটাই কি সেই লেখা?
হুমায়ুন সাদেক চৌধুরীর ফেসবুক থেকে
বিবার্তা/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]