
"বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আনতে ঘরে ঘরে যাবে ছাত্রলীগ!"
শীর্ষ নেতার এই বয়ানে 'লাভ' ইমোর পাশাপাশি প্রচুর 'হা হা' আর 'অ্যাংরি' ইমোও দেখলাম ফেসবুকে! ওগুলো বাইরের কেউ দেয়নি, খোদ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদেরই দেয়া। কারণ, আস্থা-বিশ্বাস-ভরসার প্রবল সংকট, আর তা সংগত কারনেই!
আমরা ছাত্রলীগ, বিগত দিনগুলোতে এমন কী জনসম্পৃক্ত মহান কাজ করেছি যে মানুষ আমাদের কথায় সিদ্ধান্ত নেবে, দৌড়ে গিয়ে ভোট দেবে।
আগে ঘর, তবে পর! নিজের ঘর ভাঙাচোরা, নোংরা, অগোছালো রেখে মানুষের ঘরে ঘরে গেলে মানুষ বরং আরো বিরক্ত হবে, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করবে!
কথায় নয়, কাজে প্রমাণ দিতে হবে। নইলে সবাই 'চেয়ার ধরে রাখতে মিছে প্রলাপ বকছে' ভেবে ভুল করতেই পারে!
ঘরে ঘরে গিয়ে লাভ নাই, মানুষের মনে স্থান করে নিতে হবে আগে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ইলেকশনের কথা মনে আছে? আমরা কিন্তু ঠিক মানুষের ঘরে ঘরেই গিয়েছিলাম। ভোট আনতে পেরেছিলাম? আস্তিক-নাস্তিক গুজবে উল্টো মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে!
সামনে কঠিন সময়। কতজন সেই কঠিন সময় ফেস করার আদর্শিক সাহস ও মানসিক সামর্থ্য রাখে বিগত ৫ জানুয়ারির সৌজন্যে তা বেশ জানা আছে! আগে নিজেদের সংশোধন করতে হবে।
কেন্দ্রসহ দেশের ছোট-বড় প্রতিটি ইউনিটে বৈধ কমিটি দ্বারা সুশৃঙ্খলভাবে সংগঠন গুছিয়ে নিতে হবে সবার আগে। নিজেদের মাঝে গুণগত পরিবর্তন জরুরী। সুন্দর ব্যবহার, অন্যায়ের প্রতিবাদ, মানুষের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট, নিয়মিত জনহিতকর ও মানবিক কাজ দিয়ে মানুষের মনে স্থান করে নিতে হব। তবেই মানুষ কথা শুনবে, মানবে।
নিজ দলের লাখো বঞ্চিত নেতা-কর্মীর সংগত অভিমান ভাঙানোর উদ্যোগ নিতে হবে, দুঃসময়ের যে কর্মীরা নিজেদের মানুষ দ্বারা কষ্ট পেয়ে দূরে সরে গেছে তাদের সঠিক মূল্যায়ন করে আবার পাশে টেনে আনতে হবে। সবাইকে এক সুরে শিক্ষা-শান্তি-প্রগতির গান গাইতে হবে।
মুখে বয়ান না দিয়ে বদলে যাবার সে প্রচেষ্টার বাস্তবায়ন দেখতে চাই! শুরু হোক আজ থেকেই, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়, এই মানসিকতা স্বীয় অন্তরে ধারণ করুন। সংগঠনের হাজারো নেতা-কর্মীর দুঃখ, কষ্ট, অভিমান, বঞ্চনা, অপ্রাপ্তির কথা শুনুন, অনুভব করুন, সাধ্যমতো সমাধানের চেষ্টা করুন। তৃণমূলের পালস বোঝার চেষ্টা করুন। দলে শুদ্ধি অভিযান চালান, সুবিধা নিতে এবং সংগঠনকে কলুষিত করতে ঢোকা অনুপ্রবেশকারী ছাত্রদল-শিবির সব ঝেঁটিতে বিদেয় করুন। যোগ্যদের কাছে টানুন।
দিয়াজের মায়ের পাশে দাঁড়ান, দিয়াজ হত্যার ন্যায় বিচার নিশ্চিত করুন। ২৪ ঘন্টার মধ্যে সিলেটে আসিফ ও মামুনের উপর হামলাকারী শিবির ক্যাডারদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে আল্টিমেটাম দিন! আসিফ-মামুনের চিকিৎসার খরচ বহনের দায়িত্ব নিন, মামুনের আর্টিফিশিয়াল হাত লাগানোর ব্যবস্থা করুন। যারা অতীতে ছাত্রলীগের জন্য লাইফ রিস্ক নিয়েছে সেই মৃত্যুঞ্জয়ী তুহিন, তাকিম, বাদশাদের খোঁজ-খবর নিন, কর্মসংস্থান ও বেটার লাইফ নিশ্চিত করুন।
তাহলেই আওয়ামী লীগকে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আনতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত, শেখ হাসিনার লাখো ভ্যানগার্ডকে পাশে পাবেন।
আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে!
গোলাম রাব্বানীর ফেসবুক থেকে
বিবার্তা/হুমায়ুন/কাফী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]