শিরোনাম
বন্দরে কন্টেইনারজট কাটেনি, বাড়ছে জাহাজজটও
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০১৬, ১২:০৫
বন্দরে কন্টেইনারজট কাটেনি, বাড়ছে জাহাজজটও
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+

প্রাইমমুভার ট্রেইলর ধর্মঘট স্থগিতের পর চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে গতিশীলতা এলেও কন্টেইনারজট এখনও কাটেনি। তার উপর বাড়তি সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে বহির্নোঙরে জাহাজজট। এতে আমদানিকারকদের উদ্বেগ বাড়ছে।



বন্দর সূত্র জানায়, সোমবার বন্দরের বহির্নোঙরে ৬২টি মাদার ভ্যাসেল বিভিন্ন পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। কিন্তু লাইটারেজ জাহাজ ছিল মাত্র ৪২টি। প্রয়োজনীয় লাইটারেজ জাহাজ না থাকায় ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল বা ডব্লিউটিসির নিয়মিত বার্থিং মিটিংও হয়নি। এদিকে বন্দরের বহির্নোঙরের লাখ লাখ টন পণ্য নিয়ে আমদানিকারকেরা উদ্বিগ্ন।



চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্ল্যানিং অ্যান্ড এডমিন) মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, বন্দরের অভ্যন্তরে চল্লিশ হাজারের কাছাকাছি কন্টেইনার রয়েছে। যা ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি। প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার কন্টেইনার খালাস হচ্ছে। আবার নতুন করে জাহাজ থেকে দেড় থেকে দুই হাজার কন্টেইনার নামানো হচ্ছে। এতে করে প্রতিদিন গড়ে পাঁচশ’ থেকে এক হাজার কন্টেইনার কমছে। এই জট সামলাতে আরো অন্তত দশদিন সময় লাগবে।



কিন্তু কন্টেইনারজটের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লাইটারেজ জাহাজের স্বল্পতা। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য নিয়ে বহির্নোঙরে অলস জাহাজের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। বিপুল পরিমাণ সিমেন্ট ক্লিংকার ছাড়াও গম, সরিষা, সারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে বন্দর চ্যানেলের নানা ঘাট এবং ঢাকা, মিরপুর, নগরবাড়ী, বাঘাবাড়ী, নোয়াপাড়া, খুলনা, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই সব জাহাজ পণ্য পরিবহন করে। চট্টগ্রামস্থ সিইউএফএল এবং কাফকোর উৎপাদিত সারের একটি অংশও বিসিআইসির নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন জেলার গুদামে লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে প্রায় এগারশ’ লাইটারেজ জাহাজ রয়েছে।



লাইটারেজ জাহাজ মালিকদের সংগঠন ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) তত্ত্বাবধানে এসব জাহাজ চলাচল করে। আমদানিকারকদের এজেন্টরা ডব্লিউটিসির কাছে লাইটারেজ জাহাজের বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করে। ডব্লিউটিসি এজেন্টদের চাহিদানুযায়ী জাহাজ বরাদ্দ দেয়। কিন্তু বর্তমানে লাইটারেজ জাহাজের সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য বোঝাই জাহাজের সংখ্যা বাড়লেও লাইটারেজ জাহাজ পাওয়া যাচ্ছে না।



সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, দেশে পণ্য আমদানি অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও লাইটারেজ জাহাজ বানানোর অনুমোদন বহু দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এই অবস্থায় প্রয়োজনীয় লাইটারেজ জাহাজের অভাবে পণ্য খালাসে প্রতিনিয়ত সংকট হচ্ছে। অপরদিকে দেশে শত শত লাইটারেজ জাহাজকে ভাসমান গুদাম বানিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন আমদানিকারক সময়মতো পণ্যগুলো খালাস করে নিলে সংকট এত প্রকট হতো না।



এক একটি জাহাজ একদিন অলস বসে থাকলেও কমপক্ষে দশ হাজার ডলার বা আট লাখ টাকা ফিক্সড অপারেটিং কস্ট বা এফওসি বাবদ গচ্ছা দিতে হচ্ছে। এই টাকার যোগান দেশের সাধারণ ভোক্তাদের দিতে হয় বলেও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা মন্তব্য করেছেন।



বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com