ব্যাংকে গ্রাহকের এক লাখ টাকার ওপরে জমা থাকলে আবগারি শুল্ক বাবদ এক হাজার টাকা কেটে নেবে সরকার। বর্তমানে লাখে আবগারি শুল্ক নেয়া হয় ৫০০ টাকা।
আসন্ন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে গ্রাহকদের ব্যাংকে সঞ্চিত রাখা অর্থের ওপর আবগারি শুল্ক (এক্সাইজ ডিউটি) দ্বিগুণ করা হচ্ছে বলে আলোচনা। ফলে ব্যাংক আমানতকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আবগারি শুল্ক সর্বনিম্ন ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।এনবিআরের প্রস্তাব অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা দেয়া বা উঠানো হলে কোনো ধরনের শুল্ক নেয়া হবে না। তবে ২০ হাজার এক টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট ও ডেবিট (জমা ও ঋণের হিসেবে) ব্যালেন্সের আবগারি শুল্ক ২০০ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে আলোচিত ব্যালেন্সে ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক নেয়া হয়।
এদিকে, এক লাখ এক টাকা থেকে দশ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট ও ডেবিট ব্যালেন্সের ক্ষেত্রে বর্তমানে আবগারি শুল্ক নেয়া হয় ৫০০ টাকা। আগামী বাজেটে তা দ্বিগুণ করে এক হাজার টাকা নেয়ার প্রস্তাব হয়েছে। দশ লাখ ১ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট-ডেবিট ব্যালেন্সের আবগারি শুল্ক নেয়া হয় এক হাজার ৫০০ টাকা। আগামী বাজেটে তা দ্বিগুণ করে তিন হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এক কোটি এক টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট বা ডেবিট ব্যালেন্সে আবগারি শুল্ক নেয়া হয় সাত হাজার ৫০০ টাকা। আগামী বাজেটে আবগারি শুল্ক বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব হয়েছে। পাঁচ কোটি এক টাকা থেকে তদুর্ধ্ব ক্রেডিট অথবা ডেবিট ব্যালেন্সে বর্তমানে ১৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক নেয়া হয়। আগামী বাজেটে এ শুল্ক বাড়িয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ ৩০ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে আবগারি শুল্ক বছরে একবার নেয় সরকার। এবারও তা নেবে, তবে আগের চেয়ে বাড়িয়ে দ্বিগুণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি লেনদেনের ওপর নয়, বছরের মোট ব্যালেন্সের বা সঞ্চয়ের ওপর শুল্ক নেয়া। অর্থাৎ বছর শেষে ব্যাংকের হিসাবায়নের সময় যদি কোনো গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক লাখ এক টাকা থাকে তাহলে আবগারি শুল্ক বাবদ এক হাজার টাকা কেটে নেয়া হবে। বর্তমানে যেখানে শুল্ক নেয়া হয় ৫০০ টাকা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ বলেন, বর্তমানে আমানতে সুদহার কম থাকায় অনেকে ব্যাংকেটাকা জমাতে আগ্রহী নয়। আর আবগারি শুল্কের বিষয়টি বাস্তবায়িত হলে ব্যাংকে মানুষ আমানত রাখতে আরো নিরুৎসাহিত হবে। ফলে আমানতে ধ্বস নামার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ব্যাংকও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।কারণ, মানুষ যদি ব্যাংকে টাকা না রাখে তাহলে ব্যাংক ব্যবসা করবে কিভাবে? ফলে অবৈধ পথে লেনদেন বা হুন্ডির পরিমাণ বেড়ে যাবে। বিপাকে পড়বে ব্যাংকগুলো।
বিবার্তা/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]