শিরোনাম
মূলধন যোগান : অর্থবিভাগের কঠিন মূল্যায়ন
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০১৭, ১৮:৫৪
মূলধন যোগান : অর্থবিভাগের কঠিন মূল্যায়ন
মৌসুমী ইসলাম
প্রিন্ট অ-অ+

জনগণের করের অর্থে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের মূলধনের যোগান দেয় সরকার। তবে, বছর বছর দেয়া অর্থ শুধু ব্যাংকের ব্যালেন্স শিটকেই উন্নতি করে, ব্যবসায় তেমন উন্নতি হয় না। মুনাফার মুখ দেখে না কোনও ব্যাংক। পর্যবেক্ষণে এমন চিত্রই তুলে ধরেছে অর্থবিভাগ। ব্যাংকিংখাত নিয়ে তৈরী করা এক প্রতিবেদনে উঠে আসে এমন দিক।


দুর্নীতি, খেলাপী ঋণসহ নানা কারণে সংকটে রাষ্ট্রায়ত্বখাতের সব ব্যাংক। ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের আশ্রয় নেয়ার ব্যহত হচ্ছে কার্যক্রম। তাই মূলধনের যোগান দিতে প্রতিবছর বাজেটে রাখা হয় অর্থ বরাদ্দ। চলতি অর্থবছরে এইখাতে রাখা বরাদ্দের পরিমাণ ২,০০০ কোটি টাকা। জনগণের করের অর্থে পূরণ হয় ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি।


অর্থমন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মূলধন সহায়তা দেয়া হলে ব্যাসেল-২ গাইডলাইন প্রতিপালনের লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর মূলধন অবস্থানের উন্নতি হবে। কিন্তু তফসিলী ব্যাংকের ঋণদানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে কু-ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনার সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ব্যাংকিংখাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।


রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে পাঁচ বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা মূলধনের যোগান দেয় সরকার। চলতি অর্থবছরেও বড় অংকের অর্থ মূলধন বাবদ দেয়ার পরিকল্পনা করেছে অর্থমন্ত্রণালয়।


দেখা যায়, ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে সোনালী ব্যাংকে দেয়া হয় ৮৩ কোটি টাকা। ওই বছরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে মূলধন দেয়া হয় ১০৩ কোটি টাকা। পরের বছর ২০১২-১৩ অর্থ বছরে সোনালী ব্যাংক পায় ৬ কোটি টাকা। রূপালী ব্যাংক পায় ৬২ কোটি টাকা। কৃষি ব্যাংকের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ১১৯ কোটি টাকা এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংককে (রাকাব)দেয়া হয় ১০৮ কোটি টাকা।


২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে সবচেয়ে বেশি মূলধনের যোগান দেয় সরকার। ওই বছর সোনালী ব্যাংককে মূলধনবাবদ দেয়া হয় ১,৯৯৫ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংক পায় ৮১৪ কোটি, অগ্রণী ব্যাংক ১,০৮১ কোটি, রূপালী ব্যাংক ২১০ কোটি, কৃষি ব্যাংক ১৭৫ কোটি এবং রাকাবের জন্য মূলধনের যোগান দেয়া হয় ১০৮ কোটি টাকা।


২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে সোনালী ব্যাংকে মূলধন দেয়া হয় ৭১০ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংককে দেয়া হয় ১,১৯০ কোটি, কৃষি ব্যাংক ২৫০ কোটি এবং রাকাব’র জন্য দেয়া হয় ৭৫ কোটি টাকা।


পরের বছর ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে মূলধন বাবদ বেসিক ব্যাংকে দেয়া হয়, ১২শ’ কোটি টাকা। কৃষি ব্যাংক পায় ১৪০ কোটি এবং রাকাব’কে মূলধন দেয়া হয় ৫৫ কোটি টাকা।


মূলধন যোগান দেয়ার বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থউপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে জনগণের আমানত জমা থাকে। তাই এই ব্যাংকগুলো কোনো সংকটে পড়লে তার দায় সরকারকেই নিতে হয়।


তিনি বলেন, প্রতিবছর মূলধন যোগান দিয়ে ব্যাংকগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। তবে, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়নি। মূলধন নিয়ে ব্যাংকগুলোর কি ধরণের উন্নতি হলো তা জানা যায় না। বরং প্রশ্ন উঠলেও প্রতিবছরই করের অর্থ দেয়া হয়। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।


বিবার্তা/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com