শিরোনাম
সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে তরুণরা
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০১৬, ১৪:৫৮
সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে তরুণরা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

সামাজিক ও আর্থিক সুবিধাবঞ্চিতদের কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে দেশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ)। এ ধরনের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সুবিধাভোগীর সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি। আর এসবের নেতৃত্বে রয়েছেন মূলত তরুণরা, যাদের বয়স ৩৫ বছরের নিচে।


সম্প্রতি বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসা কার্যক্রমে নিয়োজিত এসব প্রতিষ্ঠানের প্রভাব নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালিত এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘দ্য স্টেট অব সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ ইন বাংলাদেশ’ও ‘সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ পলিসি ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ কাউন্সিল। জরিপ পরিচালনায় সহায়তা করে ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (ওডিআই), বেটারস্টোরিজ, ইউএন লি. ও সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ ইউকে। এ জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৪৯।


প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশের সামাজিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক, প্রধান নির্বাহী ও পরিচালকদের অধিকাংশই তরুণ। এসব উদ্যোক্তার ৭০ শতাংশেরই বয়স ৩৫ বছরের কম। ৯১ শতাংশের বয়স ৪৫ বছরের নিচে।


সামাজিক উদ্যোগে তরুণদের এগিয়ে থাকার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আনিতা গাজী রহমান বলেন, বৈশ্বিক দিক থেকে দেখলে সর্বক্ষেত্রেই তরুণরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সমাজকল্যাণমূলক যেকোনো কাজে যুবসমাজের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশাব্যঞ্জক। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। দেশে সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ একটি বর্ধনশীল খাত। এ খাতের নেতৃত্বে তরুণসমাজ থাকার ফলে এর সুফল বেশি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারের উচিত হবে তরুণদের জন্য একটি সহজ কাঠামো তৈরি করে দেয়া, যাতে তরুণসমাজ এ খাতে উৎসাহ নিয়ে কাজ করতে পারে।


জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা পুরুষের তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশে এসব প্রতিষ্ঠানের আয় বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক টার্নওভার ২১ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছর এর পরিমাণ এক-তৃতীয়াংশ বাড়বে।


এ খাতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাবকে এ খাতের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্য প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আছে অর্থেনৈতিক সংকট, সচেতনতা ও অর্থের নগদ প্রবাহের স্বল্পতা। এক্ষেত্রে অর্থ সাহায্য, অনুদান ও স্বল্পমাত্রার ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক সমস্যা সমাধানে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনে।


তবে প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সামাজিক ব্যবসায়িক উদ্যোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নতি নিয়ে আশাবাদী গবেষকরা। এ বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, বেশির ভাগ উদ্যোক্তা আশা করেন, তাদের ব্যবসা আরো বড় পরিসরে বিস্তৃত হবে। এক্ষেত্রে দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের মডেল শাখা চালু করতে চায়।


দেশে সামাজিক ব্যবসায়িক উদ্যোগের মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। জরিপের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে জরিপে অংশ নেয়া উদ্যোগের মাধ্যমে তিন হাজার ১৮৩ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। এছাড়া চলতি বছর সৃষ্টি হয় তিন হাজার ৩৮৮ জনের।


জরিপ পরিচালনাকালে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়। এতে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিকল্পনায় সবচেয়ে অগ্রাধিকার খাত হলো জনবল গঠনে বিনিয়োগ। এছাড়া রয়েছে নতুন পণ্য ও সেবা চালু, মূলধন বৃদ্ধি, নতুন সংস্থার সঙ্গে একীভূতকরণ এবং ভৌগোলিক অবস্থান বিষয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা।


দেশের সামাজিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই কাজ করে শিক্ষাখাতে। ৩২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানই শিক্ষাখাতে কাজ করে। আর অন্যান্য সেবা খাতে কাজ করে ২৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। ব্যবসায় উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা সহায়তা খাতে ২২ শতাংশ, জীবিকা ও কর্মসংস্থান খাতে ২১ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাতে ২০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কাজ করে।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com