অর্থবছরের পাঁচ মাসেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছে সরকার। জুলাই-নভেম্বর প্রান্তিকে বিক্রি হয়েছে ২০,৩১৯ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭০৯ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। বাজেটে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৯,৬১০ কোটি টাকা।
জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর সূত্র জানায়, একক মাস হিসেবে নভেম্বরে বিক্রি হয় ৪,৪০২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। এর আগে সেপ্টেম্বরে শুধু নীট বিক্রি হয়েছিল ৩,৮৫৪ কোটি টাকা। জুলাইতে নীট বিক্রি হয় ৩,৪৯৮ কোটি টাকা। আর দ্বিতীয় মাস আগস্টে বিক্রি আরো বেশি হয়ে ৪,২৯৭ কোটি টাকায় দাঁড়ায়।
বিক্রির লাগাম টানতে ২০১৫ সালের মে মাসে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে গড়ে ২শতাংশ হারে সুদ কমানো হয়। বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগ করে এখন ১১ শতাংশের আশপাশে সুদ পাচ্ছেন সঞ্চয়কারীরা। অন্যদিকে একই সময়ে ব্যাংকে দীর্ঘ মেয়াদে টাকা রেখে ৫ থেকে ৭ শতাংশ সুদ পাওয়া যাচ্ছে।
২০১৫ সালের ২৩ মে’র আগ পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদি পরিবার ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনলে সুদ পাওয়া যেত ১৩.৪৫ ও ১৩.২৬ শতাংশ। সুদের হার কমানোর পর এখন কেউ ৫ বছর মেয়াদি পারিবারিক সঞ্চয়পত্র কিনলে ১১.৫২% হারে সুদ পাচ্ছেন। আর ৫ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সুদের হার ১১.৭৬% হয়েছে। ৩ বছর মেয়াদি ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে ১২.৫৯% থেকে কমিয়ে সুদহার ঠিক করা হয়েছে ১১.৪%। অন্যদিকে ৩ বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে সুদহার ১৩.২৪% থেকে কমিয়ে ১১.২৮% এবং ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ১৩.১৯% থেকে কমিয়ে ১১.২৮% করা হয়েছে।
স্থায়ী আমানতের বিপরীতে বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গড়ে ছয় থেকে সাত শতাংশ হারে সুদ প্রদান করছে। যেটি সঞ্চয়পত্রের সুদের তুলনায় অনেক কম। এ অবস্থায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকেই বেশি লাভজনক মনে করছেন গ্রাহকরা।
অন্যদিকে, সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ায় চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ব্যাংকখাত থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) দেশের তফসিলী ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের নেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬,০৩৬ কোটি টাকা। সাধারণত বাজেট ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকার ঋণ নিয়ে থাকে।
সঞ্চয় অধিদফতরের মহা-পরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রির একটি লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। পরে সংশোধিত বাজেটে তার সমন্বয় করা হয়।
তিনি বলেন, বিনিয়োগের একটি বড় মাধ্যম এখন সঞ্চয়পত্র। স্বল্প ও নিদিষ্ট আয়ের মানুষ এই মাধ্যমে বিনিয়োগ করে জীবন নির্বাহ করে। তাই সঞ্চয়পত্র এখন বিনিয়োগের নিরাপদ মাধ্যম।
বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]