
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে করা এক অবস্থান কর্মসূচিতে এ হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল (বুধবার) ১২টার মধ্যে প্রশাসন এ কোটা বাতিল না করলে আমরণ অনশনে যাবেন তারা।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়।
এতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, এটা শুধু আমাদের নয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশেও আমাদেরকে কোটার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যদি প্রশাসন এখনো বিচারের নামে তালবাহানা করে, শান্তি কমিটির নামে কোন তালবাহানা করে, তাহলে শিক্ষার্থীরা খুনিদের বিচার নিশ্চিত করতে বাধ্য হবে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, পোষ্য কোটা নামক প্রহসনমূলক কোটা আগামীকাল বারোটার মধ্যে বাতিল করতে হবে। যদি তা না করা হয় আমরা আগামীকাল থেকে আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হব।
১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী তানিম মুশফিক বলেন, আমরা যোগ্যতার পক্ষে এবং কোটার বিপক্ষে। কারণ, কোটা কখনো যোগ্যতা হতে পারে না। আমরা সব সময় নতুনত্বে বিশ্বাসী, আমরা পরিবর্তন চাই। আমরা ৪৭, ৭১, ৭৫, ৯০ এবং সর্বশেষ ২৪ এ স্বাধীন হয়েছি কিন্তু আমরা কোনো কিছুর পরিবর্তন করতে পারি নাই। আমরা এখনো আগের কালচার ধরে রেখেছি, আমরা এখনো অন্যায়-অবিচার ধরে রেখেছি, জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি নাই, ইনসাফের পক্ষে দাঁড়াতে পারি নাই। আজকে আমরা ইনসাফের পক্ষে দাঁড়িয়েছি, তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি পোষ্য কোটা বাতিল করবেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে আহত বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ বলেন, শহীদদের রক্তের উপর দাড়িয়ে গড়ে উঠা প্রশাসন আমাদেরকে চরমভাবে আশাহত করেছে। কেননা তারা স্বাধীন ক্যাম্পাসেও পোষ্য কোটার মতো অমূলক কোটা জারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পোষ্য কোটাকে আমরা পশুদের কোটা বলে বিবেচনা করি। কোটার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে আমি আমার একটি চোখ হারিয়েছি, প্রয়োজনে আরও একটি চোখ দেব তবুও চবিকে পোষ্য কোটা মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।
২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আরিয়ান বলেন, ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে পোষ্য কোটা নিয়ে আন্দোলন করা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকতা-কর্মচারীরা বেঁচে থাকতে তো নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেই আবার মৃত্যুর পরও কেন্দ্রীয় কবরস্থানেও সুযোগ পায়। সেখানে তাদের সন্তানদের কোটা দেওয়া কতটা যৌক্তিক প্রশাসনের কাছে সেটা আমার প্রশ্ন! স্বাধীন বাংলাদেশে কোটার সাথে আপস করা মানে শহীদদের সাথে বেঈমানি করা। তাই প্রশাসনের কাছে দাবি তারা যেন কোটাবিহীন সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা করেন।
বিবার্তা/মহসিন/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]