
মব সন্ত্রাস প্রতিরোধে ঢাবির ভিসি অফিসে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে মব সন্ত্রাসের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষককে মারধার ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রশাসনকে উক্ত ছাত্রদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দল।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের কনভেনর অধ্যাপক ড. আ. ক. ম. জামালউদ্দীনের পাঠানো এক বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও ক্যাম্পাসে মব বন্ধ করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
বিবৃতিতে জানানো হয়, সম্প্রতি মব সন্ত্রাস প্রতিরোধে ভিসি অফিসে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে মব সন্ত্রাসের শিকার হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ! আমরা অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনার সাথে জানাতে চাই যে, গত ৫ আগস্ট ২০২৪ পটপরিবর্তনের পর সারাদেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে বহু সংখ্যক সম্মানিত শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্যাতন, নিপীড়ন ও লাঞ্ছনার শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক শত বরখাস্তকৃত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের অমানবিক নির্যাতনের অবসান চেয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আ. ক. ম. জামাল উদ্দীন, কো -কনভেনর অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজমল হোসেন ভূঁইয়া, যুগ্ম কনভেনর অধ্যাপক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি পেশ করার জন্য গত ১১ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে উপাচার্যের অফিসে যান এবং উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীর নিকট স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপি দিয়ে ফিরে আসার পথে সম্মানিত চারজন শিক্ষক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, অধ্যাপক ড. আ. ক. ম. জামাল উদ্দীন, কো -কনভেনর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজমল হোসেন ভূঁইয়া, অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে চা পান করাতে যান। অল্প কিছুক্ষণ পরে শিক্ষক লাউঞ্জে থেকে বের হয়ে লিফট থেকে নেমেই আগে থেকে ওত পেতে থাকা মব সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শিকার হন। এসময় একদল মব সন্ত্রাসী এবি জুবায়েরের নেতৃত্বে শিক্ষকদের আটক করে, অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও মারধর করে। এবি জুবায়ের ডাকসুর সমাজ কল্যাণ সম্পাদক। এছাড়া অন্যান্যদের সাথে ওখানে মোসাদ্দেক নামে একজন মব সন্ত্রাসী ছিল। সন্ত্রাসীদের যতই বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল তাতে তারা কর্ণপাত না করে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বেপোরোয়া আচরণ করে সম্মানিত শিক্ষকদের গায়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে আরম্ভ করে। ঐ সময় বার বার আক্রমণের শিকার শিক্ষকবৃন্দ প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরদেরকে ফোন করা হলেও কেউ সাড়া দেয়নি। ফলে শিক্ষকবৃন্দ অত্যন্ত নির্মমভাবে মব সন্ত্রাসীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, সহকারী প্রক্টরদের কেউ নির্মম ও নজিরবিহীন মব সন্ত্রাসের শিকার খোঁজ খবর পর্যন্ত নেয়নি।
এই ঘটনার পর বেশ কিছু গণমাধ্যমে আসল ঘটনা আড়াল করা এবং মব সন্ত্রাসীদের রক্ষা করার জন্য পক্ষপাতমূলক সংবাদ করানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মব সন্ত্রাস প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত বিন্দুমাত্র পদক্ষেপ নেয়নি। এরকম প্রশাসন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কিভাবে নিরাপত্তা দিবে সেটি নিয়ে ভাববার সময় এসেছে। আমরা এরকম ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রশাসনকে উক্ত ছাত্রদের ছাত্রত্ব বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মব বন্ধ করার জন্য কঠোর ব্যবস্হা গ্রহণের দাবি জানাই।
একই সাথে ক্যাম্পাসে সকল সম্মানিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীর স্বাধীন ও স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা ও নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা প্রদানের জোড় দাবি জানাচ্ছি।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]