শিক্ষা
মুখমণ্ডল দেখাতে অস্বীকৃতি জানানো, একাডেমিক রীতিনীতিকেই অস্বীকার করার শামিল: ঢাবি শিক্ষক সমিতি
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:২৯
মুখমণ্ডল দেখাতে অস্বীকৃতি জানানো, একাডেমিক রীতিনীতিকেই অস্বীকার করার শামিল: ঢাবি শিক্ষক সমিতি
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

পরীক্ষার্থীর পরিচয় নিশ্চিন্তের জন্যই মূলত মুখমণ্ডল অনাবৃত রাখার নিয়ম আর এই নিয়ম যারা স্বীকার করছে না তারা একাডেমিক নিয়ম অস্বীকার করছে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।


২ সেপ্টেম্বর, রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি উল্লেখ করেন।


প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমিতি জানান, সম্প্রতি বিভিন্ন মহল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান একাডেমিক কার্যক্রমকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ভাইভা ও অন্যান্য একাডেমিক কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের মুখমণ্ডল অনাবৃত রাখা বাধ্যতামূলক হলেও এ বিষয়ে নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলা বিভাগ এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-এ মুখমণ্ডল অনাবৃত রাখার বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত করার যে অপতৎপরতা চলছে, সে বিষয়ে শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।


মনে রাখতে হবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ধর্মীয় মূল্যবোধকে সম্মান করে এবং একই সাথে শিক্ষকদের একাডেমিক স্বাধীনতাকেও মূল্য দেয়। একাডেমিক নীতিমালা অনুযায়ী যেকোনো পরীক্ষার শিক্ষার্থীর ‘পরিচয়’ নিশ্চিত হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষককে অবশ্যই শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের ছবির সাথে শিক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে দেখতে হয়, যা শিক্ষকদের একাডেমিক ও পেশাগত দায়িত্বের অংশ। আর এরূপ দায়িত্ব পালনে শিক্ষকদের অসহযোগিতা তথা মুখমণ্ডল দেখাতে অস্বীকৃতি জানানো পরোক্ষভাবে একাডেমিক রীতিনীতিকেই অস্বীকার করার শামিল। এক্ষেত্রে কোনো কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করছে, যা কাম্য নয়।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধকে ধারণ করে বলে শিক্ষক সমিতি আরো উল্লেখ করেন, এর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে একই ইস্যু সৃষ্টি করে দেশ ও জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। মহামান্য আদালত, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রমের সময় মুখমণ্ডল অনাবৃত রাখার পক্ষে রায় প্রদান করেছেন। এখানে প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম পালন ও পোশাক-পরিচ্ছদের স্বাধীনতা রয়েছে। অপরদিকে একাডেমিক কার্যক্রমেরও বিশেষ বিধিবিধান রয়েছে।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয় উল্লেখ করে শিক্ষক সমিতি বলেন, এখানে সকল ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও লিঙ্গের শিক্ষার্থীদের জন্য একই নীতি প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে বিশেষ কোনো গোষ্ঠী বা শ্রেণির জন্য আলাদা কোনো একাডেমিক নীতিমালা সম্ভব নয়। অতএব সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নীতিমালা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ একাডেমিক কার্যক্রম স্বাধীনভাবে পরিচালনা করবেন, এটাই স্বাভাবিক। আর এক্ষেত্রে ধর্মীয় মূল্যবোধের অপব্যাখ্যা করে শিক্ষকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধাদানকারী বা এ সম্পর্কে অপপ্রচারকারী, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে চায় এবং অরাজকতা সৃষ্টি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও গৌরব নষ্ট করতে চায়; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি তাদের এ কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।


ভবিষ্যতে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি জোর দাবি জানাবে।


বিবার্তা/ছাব্বির/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com