১ মণ ধান ঘরে তোলাই কঠিন, বর্গার ধান কীভাবে দেবো?
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:০০
১ মণ ধান ঘরে তোলাই কঠিন, বর্গার ধান কীভাবে দেবো?
সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চলছে হেমন্তের অগ্রহায়ণ মাস। ধানী জমিতে জমিতে এখন হাঁটু পানি, আবার কোন কোন তারও ওপরেও । বন্যার পানি নামে নাই চলন বিলের কৃষি জমি থেকে। তাই বাধ্য হয়েই নৌকা দিয়ে বোনা আমন ধান কাটছেন চলনবিলের কৃষক। এতে শ্রমিক খরচ পড়ছে দ্বিগুণ। একবেলা ধান কেটে শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে ৫শ থেকে ৭শ টাকা। প্রতি বিঘায় ফলন ৫ মণ থেকে ৬ মণ হলেও খরচ বাদে কৃষকদের ঘরে উঠছে মাত্র ১ মণ থেকে ২ মণ ধান।


নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিলের ডাহিয়া ও ইটালী ইউনিয়নের কয়েকটি মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাঁটু পানিতে নেমে শ্রমিকরা চরম কষ্টে ধান কাটছেন। নৌকায় বোঝাই করে কাটা ধান নিয়ে আসছেন কৃষকের খোলায়। সেখান থেকে মাড়াই করে তুলছেন ঘরে।


হেমন্তের নতুন ধান কাটতে সারাদেশ উৎসবে মেতে উঠলেও কৃষকদের দুঃখ, কষ্ট ও হতাশার চিত্র ফুটে উঠেছে কৃষি প্রধান চলনবিলের ভুক্তভোগী এ অঞ্চলের আমন চাষীদের।


কৃষকরা বলছেন, দ্বিতীয় ধাপের বন্যায় তারা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের পশ্চিম মাগুড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম ভুট্টু। জানান, তিন ভাই মিলে ৭০ বিঘা বোনা আমন ধানের চাষ করেছি। বেশির ভাগ জমিতে নৌকা নিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। পানিতে ধানকাটতে চাচ্ছেন না অনেক শ্রমিক। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাজ করে ৫শ থেকে ৭শ টাকা দিতে হচ্ছে তাদের।


ইটালী ইউনিয়নের ইন্দ্রাসন গ্রামের কৃষক সবুজ আলী জানান, ৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমন ধান চাষ করেছি। ফলন বিঘা প্রতি ৫মণ থেকে ৬মণ হচ্ছে। কিন্তু সব খরচ বাদ দিয়ে ১ থেকে ২ মণ ধান ঘরে তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন বর্গার ধান কীভাবে দেবো? দুশ্চিন্তায় আছি।


উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের কাউয়াটিকরী গ্রামের কৃষক ফরিদ প্রামানিক বলেন, বোনা আমন ধান কাটা পর আমি প্রতি বছর সরিষার চাষ করি। গত বছর ২০ বিঘা চাষ করেছিলাম। এ বছর জমিতে পানি আছে। সরিষার চাষ করতে পবরবো কিনা দুশ্চিন্তায় আছি।


উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানান, চলতি বছরে ৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ও ২৩ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের অসময়ের বন্যায় কিছু এলাকায় বোনা আমন ধানের ক্ষতিহয়েছে। আমরা কৃষি প্রণোদনা ও পরামর্শ দিয়ে সব সময় কৃষকদের পাশে থেকে সহযোগিতা করছি। চলনবিলের পানি নেমে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি সরিষা ও বোরো ধান চাষ করে বোনা আমনের ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হবেন কৃষক।


বিবার্তা/রাজু/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com