চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে শীতজনিত রোগ, ১৬ দিনে হাসপাতালে ভর্তি ৫৪৮ জন
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:০৬
চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে শীতজনিত রোগ, ১৬ দিনে হাসপাতালে ভর্তি ৫৪৮ জন
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঠান্ডা বাতাস আর রোটাভাইরাসের প্রাদূর্ভাবে চুয়াডাঙ্গায় বেড়েই চলেছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালের ওয়ার্ড বহির্বিভাগে প্রতিনিয়ত ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর চাপ বাড়ছে।


সদর হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৬ দিনে (১ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত) হাসপাতালের শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৫৪৮ জন রোগী। এর মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৩৬৩ জন, যাদের বেশিরভাগই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ১৮৫ জন নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধ রোগী।


গত ১৫ দিনে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাঁস গ্রামের শাহানাজ (২ দিন বয়স) গত ৩ নভেম্বর রাতে ভর্তি হয়ে এক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যায়। একই উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের সালমা (১ দিন বয়স) ৯ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং পরদিন দুপুরে মারা যায়।


হাসপাতালে আসা জেলা সদরের হানুরবাড়াদি গ্রামের মিরাজ ইসলাম বলেন, আমার ছেলের হঠাৎ সর্দি–জ্বর হয়, পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে দ্রুত হাসপাতালে এনেছি। ডাক্তাররা বলছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। আজ সাত দিন হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এখন কিছুটা ভালো আছে।


মৌসুমি বলেন, গত তিন দিন যাবৎ আমার চার বছর বয়সি বাচ্চার পেটে ব্যথা শুরু হয়। এরপর থেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। চিকিৎসা ভালো পাচ্ছি।


রাব্বি নামের আরেকজন বলেন, ঠান্ডা লেগে মেয়ের কাশি–শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। বাড়ির চিকিৎসা কাজ না করায় হাসপাতালে আনি। ডাক্তাররা বলেছেন নিউমোনিয়া। এখন অক্সিজেন চলছে।


চিকিৎসকেরা বলছেন, রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ কয়েকগুণ বেড়েছে, পাশাপাশি ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় ছোট শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। আতঙ্কের কিছু নেই; তবে পরিবারের সচেতনতা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।


বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, দিনের গরম ও রাতের ঠান্ডার তীব্র ব্যবধানে ছোট শিশুদের শ্বাসযন্ত্র দ্রুত জটিল হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন বহির্বিভাগেও শত শত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা, কাশি ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে।


চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ আসাদুল হক মালিক খোকন বলেন, সম্প্রতি দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। এ কারণে অনেক শিশু ঠান্ডায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ সময় বাবা-মায়ের সচেতনতাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়ার শিশুসহ সব বয়সি রোগী বাড়ছে। প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ রোগী ভর্তি হচ্ছে, এছাড়া আউটডোরে দুই শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিলে গড়ে ৩০০-৪০০ রোগী দেখছি।


তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে অধিকাংশ শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া খুব দ্রুত ভয়াবহ হয়ে ওঠে। তাই মায়ের দুধ খাওয়ানো, গরম কাপড় পরানো এবং সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেই হাসপাতালে আনাতে হবে।


বিবার্তা/আসিম/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com