‎বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাশবন নিলামের আগে চুরি করে বিক্রি
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৩৪
‎বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাশবন নিলামের আগে চুরি করে বিক্রি
মৃৃত্যুঞ্জয় রায় (ববি প্রতিনিধি)
প্রিন্ট অ-অ+

‎‎বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কাশবন বিক্রিকে ঘিরে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ। প্রশাসনের নিলাম বিজ্ঞপ্তির আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এসেস্ট শাখার এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে গোপনে কাশবন বিক্রি ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।

‎জানা যায়, গত ৬ নভেম্বর বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমানকে কাশবন কাটার প্রস্তাব দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এসেস্ট শাখা। তিনি ও তাঁর বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে, সংশ্লিষ্ট শাখা তাঁদের জানান ২০ হাজার টাকা দিলে কাজটি পাইয়ে দেবেন অথবা তাঁরাই কাশবন কেটে নিয়ে যাবেন। ‎ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে এসেস্ট শাখার কর্মচারী মিজান ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, তোমরা এই কাশবন কাটতে পারবা না। যদি কাজ করতে চাও আগে ৫ হাজার টাকা দাও বাকি ১৫ হাজার টাকা কাশবন কাটা শেষে দিতে হবে।

‎পরে বাধ্য হয়ে আব্দুর রহমানের বাবা অগ্রিম ৫ হাজার টাকা দেন। একই সঙ্গে মিজান তাঁদের দেখিয়ে দেন, কোন অংশ থেকে কাশবন কাটতে হবে।


‎এরপরের দিন বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকালে আব্দুর রহমান কাশবন কাটতে গেলে এক শিক্ষার্থীর চোখে পড়ে বিষয়টি। শিক্ষার্থী তাঁকে জিজ্ঞেস করলে আব্দুর রহমান জানান, তাঁরা ২০ হাজার টাকায় তিন তলার স্যারের কাছ থেকে কাশবন কিনেছেন। পরে ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি যাচাই করতে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে যান এসেট শাখায়, যেখানে আব্দুর রহমান স্পষ্ট করে বলেন টাকা নিয়েছেন শাখার কর্মচারী মিজান।

‎পরিস্থিতি জানাজানি হলে এসেট শাখার দায়িত্বে সাইদুর জামান বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোলা রোডের একটি চায়ের দোকানে বসে আব্দুর রহমানের কাছে টাকা ফেরত দেন।

‎এ বিষয়ে আব্দুর রহমান বলেন,বুধবার তিন তলার স্যার মিজান আমার বাবাকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। কাশবন কাটা শেষ হলে বাকি ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে বলেছিলেন। কিন্তু এখন আমরা কাশবন কাটতে পারছি না, প্রশাসন বলছে নিলাম হবে। তিনি আরও বলেন আমাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিসে যার মৌখিক অভিযোগ ভিসির কাছে দিয়েছি।

‎এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয় ১১ নভেম্বর কাশবন বিক্রির জন্য নিলামের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে।


‎অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাংবাদিকরা আব্দুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে এসেস্ট শাখায় গেলে অভিযুক্ত কর্মচারী মিজান প্রথমে সাংবাদিকদের দেখেই পালানোর চেষ্টা করেন। পরে ডেকে আনা হলে তিনি উপস্থিত হন এবং পুরো ঘটনাটি অস্বীকার করেন। যদিও তাঁর সামনেই আব্দুর রহমান স্পষ্টভাবে বলেন, এই স্যার আমাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছেন।”

‎উল্লেখ্য, এই কর্মচারী মিজানের বিরুদ্ধে এর আগেও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যান চুরির ঘটনায় তাঁর সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়েছিল বলে জানা যায়।এবং অগ্নিনির্বাপক ফায়ার বোতলে রাসায়নিক দ্রব্য না বুঝে পেয়ে প্রত্যয়ন প্রদানের নিমিত্তে ঠিকাদারের নিকট থেকে অর্থ গ্রহণ করে এই কর্মচারী।


বিবার্তা/মৃৃত্যুঞ্জয়/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com