হিলিতে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৪৩
হিলিতে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা
হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি ও আশপাশের এলাকায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন আগাম জাতের আলু চাষিরা। আমন ধান কাটার পর ফাঁকা হয়ে যাওয়া জমিতে দাপটের সঙ্গে শুরু হয়েছে অ্যাস্টেরিক, কার্ডিনাল ও স্বল্পমেয়াদি শাটাল জাতের আলুর বীজ রোপণ। মৌসুমের শুরুতে আলুর চড়া দামের প্রত্যাশায় কৃষকদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেলেও সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের বাড়তি দাম তাদের কপালে চিন্তার ছাপ পড়েছে।


উপজেলার খট্টামাধবপাড়া, ইসবপুর, বোয়ালদাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়। কৃষকরা মাঠজুড়ে হাল চাষ, আগাছা পরিষ্কার, জমিতে গোবর ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ, বেড তৈরি এবং হিমাগার থেকে আনা বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে। শীতের আগমনী বার্তায় কৃষিজমিতে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে।


খট্রামাধবপাড়ার কৃষক আবু বক্কর বলেন, আগাম আমন ধান কাটার পরপরই আলুর জমি প্রস্তুত শুরু করেছি। হিমাগার থেকে সংরক্ষিত বীজ আনা, হাল চাষ, সার প্রয়োগ, সব মিলিয়ে মাঠজুড়ে ব্যস্ততা এখন চরমে। তবে খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এক বিঘা জমিতে প্রায় ৩৫- ৪০ হাজার টাকার কমে আর আলু তোলা যায় না।


তিনি আরও বলেন, আগাম আলুর উৎপাদন সাধারণত ৫০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে বাজারে বিক্রি করা যায়। কিন্তু বাজারে আলুর দাম এখনো কম। যদি অন্য দেশে আলু রপ্তানির সুযোগ থাকতো তাহলে কৃষকদের কিছুটা লাভ হতো।


ইসবপুরের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগাম জাতের আলু বাজারে বেশি দামে বিক্রি করা যায় বলেই অ্যাস্টেরিক, কার্ডিনাল ও শাটাল জাতের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এসব আলুর প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৫০ মণ উৎপাদন হয়, ফলে ভালো বাজার থাকলে লাভজনক।


মাধবপাড়ার কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, বীজ আলুর দাম কম থাকায় প্রথমে একটু স্বস্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু সার আর কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি ও চাহিদা মতো না পাওয়ায় আমাদের সব হিসাব পাল্টে দিয়েছে। বেশি দামে সার কীটনাশক ও শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে আলু চাষ করে বাজারে দাম কম থাকলে আমরা লোকসান ছাড়া কিছুই পাবো না।


আলু রোপণ মৌসুমে শ্রমিকদেরও কাজে ব্যস্ততা বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে বিভিন্ন ধাপে কাজ করছেন তারা।


স্থানীয় শ্রমিক গোপাল চন্দ্র বলেন, আগাম আলুর সময়ে কাজ থাকে বেশি। প্রতিদিন আয় ভালো হয়। এই আয় দিয়ে এখন পরিবার নিয়ে ভালোভাবেই চলতে পারছি।


হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, কৃষকদের আগাম আলু চাষে সব ধরনের কারিগরি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূল রয়েছে। আশা করছি ফলনও ভালো হবে, দামও ভালো পাবেন চাষিরা।


তিনি আরো জানান, চলতি বছরে হাকিমপুর উপজেলায় ১ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ইতোমধ্যে ৫০ হেক্টর জমিতে আগাম আলুর বীজ রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলায় এখন পর্যন্ত সার এর সংকট নেই। তবে কৃষকের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা সার ও কীটনাশক এর দাম বেশি যেন নিতে না পারে। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি বিভাগ তদারকি করছে বলে জানান তিনি।


বিবার্তা/রববানী/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com