
ইসলামে প্রতিবেশীর অধিকার এতই সুমহান যে, তা মানুষের বহু নফল ইবাদতকে অর্থহীন করে দিতে পারে। সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো প্রতিবেশী আর তাদের সঙ্গে আচার-আচরণই একজন মুমিনের প্রকৃত চরিত্রের মাপকাঠি।
প্রতিবেশীর প্রতি অন্যায় ও অসদাচরণ কোনো ব্যক্তির অত্যধিক ইবাদতকেও আল্লাহর কাছে মূল্যহীন করে দিতে পারে। এ বিষয়ে হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি শিক্ষণীয় ঘটনা রয়েছে:
আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, এক লোক রাসুলুল্লাহ (সা.)কে বললেন, ‘আল্লাহর রাসুল, এক নারী তার অত্যধিক নামাজ, রোজা, দানের জন্য সুপরিচিত। কিন্তু সে কথার মাধ্যমে তার প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়। তার ব্যাপারে আপনি কী বলেন?’
রাসুল (সা.) বললেন, ‘সে জাহান্নামি।’
লোকটি আবার বললেন, ‘আল্লাহর রাসুল, আরেক নারীর ব্যাপারে প্রসিদ্ধি আছে যে, সে রোজা কম রাখে, দানও কম করে এবং নামাজও কম পড়ে। বলতে গেলে সে এক টুকরো পনিরই দান করে, কিন্তু প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না। তার ব্যাপারে আপনি কী বলেন?’
রাসুল (সা.) জবাব দিলেন, ‘সে জান্নাতি।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৯২৯৮)
এই হাদিস অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, লোকদেখানো বা কেবল ব্যক্তিগত ইবাদতের চেয়েও মানুষের অধিকার এবং সামাজিক সদ্ভাব বজায় রাখা আল্লাহর কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। যে নারী ইবাদতে কম হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেশীর প্রতি সদাচারী, সে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে সফল, আর যে ইবাদতে অধিক হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেশীর হক নষ্টকারী, তার আমল মূল্যহীন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়ার পরিণতি সম্পর্কে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়, সে জান্নাতের মতো সুমহান নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হবে।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৪৬)
অর্থাৎ, একজন মুমিনের পরিচয় কেবল তার সেজদা বা দান-সদকার পরিমাণ দিয়ে নয়, বরং তার চরিত্র ও ব্যবহার দিয়েই নির্ধারিত হয়। যে ব্যক্তির আচরণ তার চারপাশের মানুষকে শান্তি দিতে পারে না, তার জন্য জান্নাতের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]