
চীনের সঙ্গে সাম্প্রতিক বাণিজ্য আলোচনার ফলাফল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকায় বাজারে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে এখনও। তার উপর চীনের দুর্বল তেলচাহিদা ও ওপেক প্লাস জোটের উৎপাদন বৃদ্ধির ঘোষণা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে তেলের বাজারে। এ অবস্থায় বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দামে আরও একবার পতন লক্ষ্য করা গেছে বুধবার (১১ জুন)।
এদিন সকালে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার্সের দাম ১৫ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়ায় প্রতি ব্যারেল ৬৬ দশমিক ৭২ ডলারে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড ১০ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ৬৪ দশমিক ৮৮ ডলারে লেনদেন হয়। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুই দিনব্যাপী এক চূড়ান্ত আলোচনা শেষে লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তারা একটি সমঝোতার কাঠামোতে একমত হয়েছেন। এর মাধ্যমে বাণিজ্য বিরতি আবার সচল করার পাশাপাশি চীনের বিরল খনিজ ও চুম্বক জাতীয় পণ্যের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পথ সুগম হবে বলে জানান মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক। এই দুই দেশ বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি ও শীর্ষ তেলভোক্তা হওয়ায় তাদের সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি বিশ্ববাজারে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
ফিলিপ নোভার জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সচদেবা বলেন, জ্বালানি তেলের এই মূল্য সংশোধনের পেছনে রয়েছে প্রযুক্তিগত মুনাফা গ্রহণ এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার আগেই বাজারে সতর্কতা।
লুটনিক আরও জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলোচনার ফলাফল সম্পর্কে ব্রিফিং গ্রহণের পরই এটি অনুমোদন করবেন।
বাজার বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, চীনের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কমে গেলে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকলে তা তেলের চাহিদা ও দামে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
অন্যদিকে, তেল সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে ওপেক প্লাস জোট। জুলাই মাসে দৈনিক ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে জোটটির, যা উৎপাদন হ্রাস তুলে নেয়ার ধারাবাহিক চতুর্থ পদক্ষেপ। তবে কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, আঞ্চলিক বাজারে এই অতিরিক্ত তেলের চাহিদা সেভাবে তৈরি হবে না।
ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের জলবায়ু ও পণ্য বিশ্লেষক হামাদ হুসেইন বলেন, সৌদি আরবসহ ওপেক প্লাস জোটের অভ্যন্তরীণ চাহিদা কিছুটা ভারসাম্য আনতে পারে। তবে, এই চাহিদা মৌসুমি হওয়ায় আমরা এখনও আশা করি বছরের শেষ নাগাদ ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৬০ ডলারে নেমে আসবে।
এদিকে, মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) সাপ্তাহিক তেল মজুত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে আগামী বুধবার (১২ জুন)।
মার্কেট সূত্র বলছে, গত সপ্তাহে দেশটির অপরিশোধিত তেল মজুত ৩ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল কমেছে।
রয়টার্স পরিচালিত এক জরিপে বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, ৬ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের তেল মজুত ২০ লাখ ব্যারেল কমলেও ডিজেল ও গ্যাসোলিনের মজুত কিছুটা বেড়েছে।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]