
অর্থ বা পুরস্কারের বিনিময়ে দায়িত্ব পালন করে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউজ অব লর্ডস থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হচ্ছে দুই সদস্য লর্ড রিচার্ড ডনাট এবং লর্ড ইভান্সকে।
লর্ড রিচার্ড ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান। তাকে চারমাসের জন্য বরখাস্ত করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ী লর্ড ইভান্সকে বরখাস্ত করা হচ্ছে পাঁচ মাসের জন্য।
সাংবাদিকদের একটি ছদ্মবেশী অভিযানে তাদের হাউজ অব লর্ডসের আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়টি ধরা পড়ে।
‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকার এই গোপন অভিযানের পর উচ্চকক্ষের সদস্যদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তকারী ‘হাউজ অব লর্ডস স্ট্যান্ডার্ডস’ দুইজনের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে তদন্ত শুরু করে।
উচ্চকক্ষের সদস্যদের আচরণবিধি তদারককারী হাউজ অফ লর্ডস কন্ডাক্ট কমিটি দেখতে পেয়েছে, এই বিধি ভঙ্গের আলাদা চারটি ঘটনা ঘটেছে।
ওদিকে, হাউজ অফ লর্ডস কমিশনার ফর স্ট্যান্ডার্ডস এর তদন্তে দেখা গেছে, লর্ড রিচার্ড ডনাট তিন কোম্পানির জন্য তদবির করতে তিনি মন্ত্রী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে চিঠি চালাচালি এবং বৈঠক করেছেন। একাজের পেছনে তার অর্থনৈতিক স্বার্থ ছিল।
রিচার্ড একটি প্রতিরক্ষা ফার্মের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন, ওই ফার্মে তিনি অর্থের বিনিময়ে উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করতেন- এমনটি বেরিয়ে এসেছে তদন্তে।
গোপন অভিযানে গার্ডিয়ানের সাংবাদিকদের তোলা ফুটেজে এও দেখা গেছে যে, রিচার্ড ব্যাবসায়ীর ছদ্মবেশে আসা সাংবাদিকদেরকে বলছেন যে, তিনি তাদেরকে মন্ত্রীদের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিতে পারবেন।
লর্ড ইভান্সও একটি কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার হিসাবে অর্থনৈতিক স্বার্থের দিক বিবেচনায় ছদ্মবেশী সাংবাদিকদেরকে এমপি’দের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।
এমনকি নিজের ছেলের মালিকানাধীন একটি কোম্পানির জন্য পার্লামেন্টে একটি অনুষ্ঠান স্পনসর করে তিনি আচরণবিধি ভঙ্গ করেন। কোম্পানিটির এক তৃতীয়াংশ শেয়ারহোল্ডার ছিলেন ইভান্স।
ছদ্মবেশী সাংবাদিকদের কাছে দুইজন যা কিছু বলেছিলেন সে সব নিয়ে গার্ডিয়ান প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর লর্ড রিচার্ড স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছেন, আচরণবিধি বুঝতে তিনি ভুল করেছিলেন।
লর্ড কন্ডাক্ট কমিটি উপসংহার টেনে বলেছে,বাস্তবে যদিও কোনও তদবির হয়নি এবং অর্থ বিনিময়ও ঘটেনি, তবে দুইজনই ছদ্মবেশী সাংবাদিকদের সঙ্গে যে ধরনের কথাবার্তা বলেছেন তাতে তাদের এমন ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটেছে- যা জনস্বার্থে নয়, বরং অর্থের বিনিময়ে পার্লামেন্টের দায়িত্ব পালনেরই নামান্তর।
সেকারণেই দুইজনের ক্ষেত্রে সবসময় ব্যক্তিগত মর্যাদার সঙ্গে পার্লামেন্টের সদস্যদের কাজ করে চলার আচরণবিধির ধারা ভঙ্গ হয়েছে।
বিবিসি জানায়, লর্ড রিচার্ড ডনাট এবং লর্ড ইভান্স কেউই তদন্তে যা পাওয়া গেছে এবং বরখাস্তের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তার বিরুদ্ধে আবেদন করেননি। হাউজ অব লর্ডস অনুমোদন দিলেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]