 
        
 অঅ-অ+
অঅ-অ+
                    দীর্ঘ প্রায় ৯ মাসের বিরতির পর আগামীকাল শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। কিন্তু সেই দিন থেকেই জাহাজ না চালানোর ঘোষণা দিয়েছে জাহাজ পরিচালনাকারীরা। এতে ভেস্তে যেতে পারে ভ্রমণ পিপাসুদের যাত্রা।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকদের কেবল দিনে গিয়ে দিনে ফেরার শর্তে দ্বীপ ভ্রমণের সুযোগ থাকবে। প্রাথমিকভাবে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ ও ‘বার-আউলিয়া’ নামের দুটি জাহাজ সেন্টমার্টিনে চলার কথা থাকলেও, জাহাজ মালিকরা এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।
সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর নিশ্চিত করেছেন, আগামীকাল থেকে কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছাড়বে না।
তিনি এর কারণ হিসেবে ট্যুরিজম বোর্ডের সফটওয়্যার চালু না হওয়া এবং দিনে গিয়ে দিনে ফেরার শর্তে পর্যাপ্ত পর্যটক না পাওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তবে গত বছরের মতো ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে জাহাজ চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন মালিকরা।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে সেন্টমার্টিন ভ্রমণসূচি ও পর্যটকদের উপস্থিতির ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কেনা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে এবং কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকদের রাত্রিযাপন অনুমোদিত নয়, কেবল দিনের বেলা ভ্রমণ করা যাবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দৈনিক দুই হাজার পর্যটক রাতে থাকার সুযোগ পেলেও, ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি ও বারবিকিউ পার্টি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সৈকতে মোটরসাইকেল, সিবাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচলও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পরিবেশবান্ধব পর্যটন নিশ্চিত করতে পর্যটকদের পলিথিন বহন না করতে এবং চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান, শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতলের মতো একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বহন নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘাটে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন এবং টিকিটের কিউআর কোড চেক করাসহ সরকারের ১২টি নির্দেশনা পর্যটকেরা মেনে চলছে কি না, তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
সরকার আশা করছে, এই নতুন নির্দেশনার মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপ দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হবে।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]