
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের নাজুক পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার নতুন করে ১২ দফা নির্দেশনা জারি করেছে।
২২ অক্টোবর, বুধবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা থেকে এই নির্দেশনা সংবলিত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।
লাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ধারা ১৩ অনুযায়ী প্রণীত ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩’ এর আলোকে নতুন এসব নির্দেশনা কার্যকর হবে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্টমার্টিনে চলাচল করতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট নিতে হবে, যেখানে প্রতিটি টিকিটে থাকবে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড। কিউআর কোডবিহীন টিকিটকে নকল হিসেবে গণ্য করা হবে।
নতুন বিধি অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে শুধু দিনের বেলায় দ্বীপে ভ্রমণ করা যাবে, রাতযাপন নিষিদ্ধ থাকবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সীমিতভাবে রাতযাপনের অনুমতি থাকবে, আর ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে যেতে পারবেন।
দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দে গান বাজানো বা বারবিকিউ পার্টি আয়োজন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, প্রবাল, পাখি, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ অন্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সীবাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যান চলাচল বন্ধ থাকবে। দ্বীপে পলিথিন বহন নিষিদ্ধ এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ছোট প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের পুনঃব্যবহারযোগ্য পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সরকারের প্রত্যাশা, এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপে দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের চর্চা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং দ্বীপের অনন্য প্রতিবেশ সংরক্ষিত থাকবে।
উল্লেখ্য, সেন্টমার্টিনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন বাস্তবায়ন নিয়ে এক সভা মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। উপস্থিত ছিলেন সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং ই-টিকিটিং বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]