
ইলিশের চড়া দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, বাজারে দাম কমাতে না পারাটা আমারও কষ্টের কারণ। আমি কোনো আত্মপক্ষ সমর্থন করব না। ব্যর্থতা বলতে চাইলে বলতে পারেন। তবে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফরিদা আখতার এ মন্তব্য করেন। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫’ ও সারা দেশের বাজার পরিস্থিতি জানাতেই এ আয়োজন করা হয়।
উপদেষ্টা জানান, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলায় ইলিশের দাম এখনো বেশি। ঢাকায় ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি এক হাজার থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকায়। ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশের দাম ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা এবং ৯০০ গ্রামের বেশি হলে প্রতি কেজি ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আমি খুব সুখবর দিতে পারছি না। এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি আগেও বলেছি, বাংলাদেশের মানুষ যেন সাশ্রয়ী দামে ইলিশ খেতে পারে, সে জন্য আমরা গবেষণা চালাচ্ছি। আসল সমস্যাটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। ইলিশের প্রাপ্তিটা শুধুমাত্র যে অভিযান চালিয়ে মা ইলিশ রক্ষা করলে হচ্ছে না, আমরা দেখছি আরও অনেক কারণ আছে। আশা করছি, এ বছর না পারলেও আগামীতে ভালো অবস্থায় আসতে পারব।
তিনি জানান, এ বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ১০৩ টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারিত করেছে প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১২ দশমিক ৫০ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
রপ্তানি ও বাজারমূল্যের তুলনাতেও অসামঞ্জস্যের কথা উল্লেখ করেন তিনি। গত ১৮ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ২২ মেট্রিক টনের বেশি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
উপদেষ্টা জানান, আগামী ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ আহরণ, ক্রয় ও বিক্রি নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময়ে ৩৭ জেলার ১৬৫ উপজেলার ৬ লাখ ২০ হাজার জেলে পরিবারকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় সাড়ে ১৫ হাজার টন চাল দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইলিশের উৎপাদন কমে যাওয়া এবং বাজারে দাম না কমায় আমরা উদ্বিগ্ন। জনসাধারণের কষ্ট আমরাও অনুভব করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যর্থতা বলতে চাইলে বলতে পারেন। বাজারে ইলিশের দাম না কমা আমারও কষ্টের কারণ। আমি কোনো রকম আত্মপক্ষ সমর্থন করব না। তবে আমরা মূল কারণটা জানার চেষ্টা করেছি। আমরা আড়তদারদের অনুরোধ করেছি মুনাফা কিছুটা কমাতে। সিটি করপোরেশনকে বলেছি যেন তারা টোল না নেয়। তারপরও প্রাপ্যতার বিষয়টি বড় একটি কারণ। কিছু জায়গায় মজুতের অভিযোগ আছে কিনা, তা আমরা খতিয়ে দেখব। তবে এই মুহূর্তে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]