
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হুঁশিয়ারির পরও কমপ্লিট শাটডাউন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- আপাতত ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি পূরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত কমপ্লিট শাটডাউন বা বিদ্যালয়ে তালা ঝুলানো কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের নেতাদের যৌথ মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান রাত ৯টার দিকে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বুধবার শিক্ষকরা সর্বাত্মক কমপ্লিট শাটডাউন করেছেন। তিন দফা দাবি পূরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলবে। আজ রাতে ভার্চুয়াল মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের অবলিম্বে পরীক্ষা গ্রহণের কাজে অংশ নিতে নির্দেশ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপরও কেউ পরীক্ষা না নিয়ে কর্মবিরতি বা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি করলে তার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি আইন, আচরণ বিধিমালা এবং ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বুধবার বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিকের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠন গত ১ ডিসেম্বর থেকে কর্মবিরতি এবং পরে ৩ ডিসেম্বর থেকে তথাকথিত কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবহিত রয়েছে। এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ এবং বিদ্যমান পরিস্থিতির বিষয়ে এ মন্ত্রণালয় অবস্থান জানানো হলো।
‘সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন দেওয়ার দাবিসহ অন্য আরও দুটি দাবি, যথাক্রমে ১০ ও ১৬ বছর চাকরি সমাপনান্তে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে সহকারী শিক্ষকদের মধ্য হতে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির বিষয়ে ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। দাবিগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা এবং বেতন-কমিশনের সম্মানিত সভাপতির সঙ্গে উল্লিখিত দাবিসমূহ বাস্তবায়নের বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করেছেন।’
‘প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গত ৭ আগস্ট ৩৬৪ সংখ্যক স্মারকে সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১৩তম গ্রেড হতে ১১তম গ্রেড এ উন্নীতকরণের বিষয়টি বিবেচনার জন্য সভাপতি, জাতীয় বেতন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল উন্নীতকরণের বিষয়টি পে-কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পরপরই অর্থ বিভাগ কর্তৃক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে মর্মে ১০ নভেম্বর অর্থ বিভাগের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক উপর্যুক্ত ব্যবস্থাসমূহ গ্রহণ করার পরও দেখা যাচ্ছে সহকারী শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠন চলমান বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ না করে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা গ্রহণে বাধা-বিঘ্ন সৃষ্টি করেছেন এবং কোথাও কোথাও পরীক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষকদের ওপর হামলা ও শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়ে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মসূচি গ্রহণ সরকারি চাকুরি আইন, আচরণ বিধিমালার পরিপন্থি এবং ফৌজদারি আইনেও বিবেচ্য।’
‘এ পরিস্থিতিতে দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবিলম্বে কাজে যোগদান করে শিক্ষার্থীদের তৃতীয় প্রান্তিকের পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত বিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পন্নের জন্য নির্দেশনা দেওয়া যাচ্ছে। অন্যথায় এ ধরনের শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি আইন, আচরণ বিধিমালা ও ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]