শিরোনাম
রোহিঙ্গা সমস্যা: মানবিক সঙ্কট ব্যবস্থাপনার ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৫৪
রোহিঙ্গা সমস্যা: মানবিক সঙ্কট ব্যবস্থাপনার ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বৈশ্বিক মানবিক চাহিদা অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বৈশ্বিক সঙ্কট ব্যবস্থাপনার মানবিক ও অর্থনৈতিক ব্যয় দুই হাজার ৩৫০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা ছিল সর্বোচ্চ।


তিনি বলেন, আর মিয়ানমারের সাথে আমাদের সীমান্ত এলাকায় এ যাবত কালের মধ্যে সংঘটিত সর্বাপেক্ষা বড় মানবিক বিপর্যয় অর্থাৎ প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার ফলে মানবিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষেত্রে ভয়াবাহ বিপর্যয়ের পাশাপাশি এই ব্যয় আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।


যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদফতরে বুধবার‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের ফোরামের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।


জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ১৯৭৪ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ভাষণের বৈশ্বিক শান্তি বিষয়ক উদ্ধৃতি শাহরিয়ার আলম তুলে ধরেন। উদ্ধৃতিটি হলো, ‘মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি একান্ত দরকার। এই শান্তির মধ্যে সারা বিশ্বের সকল নর-নারীর গভীর আশা-আকাক্ষা মূর্ত হয়ে রয়েছে’।


তিনি বলেন, সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ আমাদের পররাষ্ট্র নীতির এই মূলমন্ত্র থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ জন্মলগ্ন থেকেই শান্তির সংস্কৃতির প্রবক্তা।


‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদের সরকারের সময় জাতিসংঘে উত্থাপন করা হয় উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম, বাংলাদেশের এই প্রস্তাব ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এজেন্ডাভুক্ত হয়, যা ১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ‘ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্রোগ্রাম অব অ্যাকশান অন কালচার অব পিস’ শিরোনামে ৫৩/২৪৩ নম্বর রেজুলেশন হিসাবে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।


আগামী ৭৩তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যখন রেজ্যুলেশনটির ফলোআপ করা হবে তখন সকল সদস্য রাষ্ট্র ১৯৯৯ সালে গৃহীত এই ডিক্লারেশনের ২০ বছর পূর্ণ করবে মর্মে প্রত্যাশার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার জন্য তিনি সদস্য রাষ্ট্রসমূহের প্রতি আহ্বান জানান।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সবময়ই জাতিসংঘের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ও ‘টেকসই শান্তি’ বিষয়ক পদক্ষেপে নিবেদিত রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে অর্থাৎ এবছর এপ্রিলে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি’ বিষয়ক জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের সভায় বাংলাদেশ ডেলিগেশনের নেতৃত্ব দেন। এর আগে মার্চে লিথুনিয়াকে সাথে নিয়ে আমরা একই বিষয়ে সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন কো-ফ্যাসিলেটেট করেছি।


পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তির সংস্কৃতির অত্যুৎসাহী একজন প্রবক্তা হিসেবে সদ্যপ্রয়াত জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের অবদান গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।


অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ইউনেস্কোর শুভেচ্ছা দূত ড. রিগোবার্তা মেনচু তুম। স্বাগত ভাষণ দেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিরোস্লাভ লাইচ্যাক, জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তার শেফ দ্যা কেবিনেট মারিয়া লুইজা রিবেইরো ভিয়োট্টি।


শান্তির সংস্কৃতি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের এই ফোরামের দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেলে ‘শান্তির সংস্কৃতি: টেকসই শান্তির নিশ্চিত পথ’ শিরোনামে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোজম্যারি এ ডিকারলো, মেক্সিকোর স্থায়ী প্রতিনিধি জুয়ান জোসে গোমেজ ক্যামাচো, কেনিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি লাজারুস ওমবাই অ্যামায়ও, শান্তি বিষয়ক প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ মারিয়ে পাওলি রোওডিল এবং অধ্যাপক র‌্যাচেল অ্যালেন।


প্যানেল আলোচনা অংশের মডারেটর ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল করিম চৌধুরী।


দিনব্যাপী আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যও দেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিরোস্লাভ লাইচ্যাক।


বিবার্ত/খোকন/জাকিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com