‘আমার ছেলে কীএমন অপরাধ করেছিল? কেন আমার সাজানো স্বপ্নের সংসার ভেঙে তছনছ করে দিল? অপরাধ করলে তার জন্য তো আইন ছিল। সে তো আর আমাকে ফোন দিয়ে বলবে না, আব্বু তুমি কেমন আছো? আব্বু কিছু টাকা লাগবে সকালে খাওয়ার টাকা নাই।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিহত শিক্ষার্থী মোত্তালিব হোসেন লিপুর বাবা বদরউদ্দিন।
বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল লতিফ হলের ক্যান্টিনের পাশের নর্দমা থেকে লিপুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
লিপুর বাবা আরো বলেন, ‘আমার ছেলে শান্ত প্রকৃতির ছিল। সে কারো সাথে কোনো বিবাদে যেত না। বাসায় এসে ছোট ভাই বোনদের নিয়মিত লেখাপড়ার খোঁজ খবর নিতো। সবসময় তাদেরকে ভালো উপদেশ দিত। কিন্তু এখন কে খোঁজ নেবে?’
মোত্তালিব হোসেন লিপু বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি নাবাব আব্দুল লতিব হলের ২৫৩ রুমের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাসা ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুণ্ড উপজেলার মুকিমপুর গ্রামে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে লিপু ছিলো বড় সন্তান। ছোট বোন দশম শ্রেণিতে আর ছোট ভাই এখনো স্কুলে যাওয়া শুরু করেনি। লিপুর বাবা মাঠে কাজ করে কোনো রকম দিনাতিপাত করেন।
সংস্কৃতমনা লিপু কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তার মৃত্যুর খবরে ক্যাম্পসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তবে লিপুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। কে বা কারা রাতের আধারে তাকে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে তা নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আমীর জাফর বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই শিক্ষার্থীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। লিপুর পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নাকে-মুখে রক্তের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এদিকে, জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তার রুমমেটসহ দুইজনকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
লিপুর পাশের রুমের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানায়, সে আগে নিচতলায় থাকতো। ৫ থেকে ৬ মাস হয়েছে দ্বিতীয় তলায় উঠেছে। তাকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকতে দেখা যায়নি। সবার সাথে হাসি মুখে কথা বলতো। কোনো দিন তার সাথে কারো বাকবিতণ্ডা হয়নি।
এদিকে, মতিহার থানার ওসি হুমায়ুন করিব বলেন, তার হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটা রহস্য থেকেই যাচ্ছে। পুলিশ এ নিয়ে তদন্ত করে যাচ্ছে। আশা করি এ রহস্য উদঘাটন হবে।
বিবার্তা/নাঈম/রয়েল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]