শিরোনাম
রাজশাহীতে নারী ও শিশু নির্যাতন কমেছে
প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৭:৩০
রাজশাহীতে নারী ও শিশু নির্যাতন কমেছে
রাজশাহী ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+

আগের বছরের তুলনায় ২০১৬ সালে রাজশাহীতে নারী ও শিশু নির্যাতন সামান্য কমেছে। বেসরকারি সংস্থা লেডিস অর্গানাইজেশন ফর স্যোশাল ওয়েলফেয়ারের (লফস) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। শনিবার লফস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


লফসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৫ সালে রাজশাহীতে ৫০৮ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়। আর ২০১৬ সালে নির্যাতনের শিকার হয় ৪৯৯ জন নারী ও শিশু।


সামগ্রিকভাবে সংখ্যায় কম হলেও আগের বছরের তুলনায় ২০১৬ সালে নারী ও শিশু হত্যা এবং আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে। ফলে নারী ও শিশু নির্যাতনের সামগ্রিক চিত্র প্রায় একই রয়েছে। অবশ্য লফসের নির্বাহী পরিচালক শাহনাজ পারভীন বলেছেন, প্রতিবেদন দুটি শুধুমাত্র পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত ঘটনাগুলোর হিসেবে। সমাজে অনেক ঘটনা ঘটছে যা পত্রিকায় প্রকাশ হয় না। ফলে তা নজরেও আসে না। যতটুকু প্রকাশিত হচ্ছে সে তথ্যেই উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো।


লফসের দেয়া তথ্যমতে, ২০১৬ সালে রাজশাহীতে ১৬ নারী ও ১৮ শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে আরও ৮ নারী ও ৩ শিশুকে। এ বছর রাজশাহীতে আত্মহত্যা করেছে ৪২ নারী ও ৩৪ শিশু। আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ৮ নারী ও ৫ শিশু। এ বছর ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১১ নারী ও ৩২ শিশু। যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৩ নারী ও ১৭ শিশু। নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছে ৩৬ নারী ও ৩৪ শিশু। এছাড়া ২০১৬ সালে রাজশাহীতে ৯ নারী ও ২২ শিশু নিখোঁজ হয়েছে। অপহৃত হয়েছে এক নারী ও ১৪ শিশু। নির্যাতনের শিকার হয়ে আহত হয়েছে ৫৫ নারী ও ৩৪ শিশু। আর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ৩৬ নারী ও ২১ শিশুর।


২০১৫ সালে রাজশাহীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় ২১ নারী ও ৪ জন শিশু। হত্যার চেষ্টা করা হয় আরও এক নারীকে। আত্মহত্যা করেন ৩২ নারী ও ২০ শিশু। আত্মহত্যার চেষ্টা করেন আরও ২ নারী ও ৩ শিশু। ওই বছর যৌন নির্যাতনের শিকার হন ১২ নারী ও ২১ শিশু। ধর্ষণের শিকার হন ১৫ নারী ও ২৫ শিশু। ২০১৫ সালে নিখোঁজ হন ৫ নারী ও ১৯ শিশু। অপহৃত হন ৬ নারী ও ২০ শিশু। অন্যদিকে নির্যাতনের কারণে আহত হন ৭১ নারী ও ৫৮ শিশু। আর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ৩১ নারী ও ৫২ শিশুর। এ ছাড়াও ওই বছর পাচারের শিকার হয় আরও ৫ শিশু।


গত বছরের তুলনায় নারী ও শিশু নির্যাতন সামান্য কমলেও ২০১৬ সালে পুঠিয়ায় এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, চারঘাটে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, পবা উপজেলার চৌবারিয়া গ্রামে দুই কিশোরকে হাত পা বেঁধে নির্যাতন, নগরীর বেলদারপাড়ায় গৃহবধূকে সিল-পাটা দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার চেষ্টা, আবাসিক হোটেলে দুই কিশোরীকে গণর্ধষণ, তানোরে নবজাতককে পুকুরে ফেলে হত্যা, একই উপজেলায় ৭ বছর বয়সী এক শিশুকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা, বাঘায় এক কিশোরিকে ৩ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ, গোদাগাড়ীতে গ্রন্থাগারিকের হাতে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা এবং নগরীর এক প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনা পাশবিক নির্যাতনের জঘন্য নজির বলে উল্লেখ করেছে লফস।


রাজশাহীতে নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করা এই সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক শাহনাজ পারভীন বলেন, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে রাজশাহীতে নারী ও শিশু নির্যাতন সামান্য কমলেও তা উদ্বেগজনক। নারী ও শিশু নির্যাতন আরও কমিয়ে আনতে কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সমাজের সব শ্রেণিপেশার মানুষের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।


বিবার্তা/রিমন/পলাশ


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com