জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যয় ২২৫ কোটি টাকা: তাপস
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৩, ১৮:০৫
জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যয় ২২৫ কোটি টাকা: তাপস
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজস্ব অর্থায়নে ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গত ৩ বছরে ১৩৬টি স্থানে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হয়েছে।


তিনি বলেন, সামান্য বৃষ্টিতে ঢাকা শহর এখন আর ডুবে যায় না। ধানমন্ডি-২৭, পলাশী মোড়, আজিমপুর মোড়, শান্তিনগর, রাজারবাগ, সচিবালয়, মতিঝিল এলাকা বিশেষত নটরডেম কলেজের সামনের অংশ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সামনের রাস্তা, সূত্রাপুর শিল্পাঞ্চল এখন আর পানিতে ডুবে যায় না। সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যেত আমাদের প্রিয় এই শহর। জলমগ্ন হয়ে পড়তো নগরীর প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা। কিন্তু দায়িত্বভার গ্রহণের পর জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।


১৬ মে, মঙ্গলবার ডিএসসিসি নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে উন্নত ঢাকার উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ৩ বছর শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের ৩ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।


মেয়র বলেন, বিগত ৩ বছরে আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের সামগ্রিক কার্যক্রমের ফলে বিগত ৩ বছরে সড়ক ও হাঁটার পথে পড়ে থাকা শতভাগ উন্মুক্ত বর্জ্য ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ বর্জ্য সরাসরি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গত ৩ বছরে ৩৬টি ওয়ার্ডে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণের ফলে বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৮-তে উন্নীত হয়েছে। অথচ আমার দায়িত্বভার গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল মাত্র ২২। এছাড়াও বাকি ওয়ার্ডগুলোতেও অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলমান। আমরা ৭৫টি ওয়ার্ডে প্রাথমিক বর্জ্য সংগ্রহকারী নিবন্ধনের মাধ্যমে সকল বাসা-বাড়ি ও স্থাপনা থেকে দৈনিক ভিত্তিতে বর্জ্য সংগ্রহ নিশ্চিত করেছি। বর্তমানে দৈনন্দিন ভিত্তিতে রাত ৯টা হতে ভোর ৬টার মধ্যে সব রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাসিক ভিত্তিতে দুইবার সব উন্মুক্ত নর্দমা পরিষ্কার করা হচ্ছে।


তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন, খাল, নর্দমা, বক্স কালভার্ট থেকে বর্জ্য ও পলি অপসারণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আধুনিকায়ন, আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনরুদ্ধার এবং খাল সংস্কার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির মতো কার্যক্রমের সুফল নগরবাসী ইতোমধ্যে পাওয়া শুরু করেছেন। ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দীর্ঘ ৩৪ বছর পর ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর শাখা প্রশাখাসহ ১১টি অচল খাল, বর্জ্যে জমাট বদ্ধ ৫টি বক্স কালভার্ট ও প্রায় ২০০ কিমি দৈর্ঘ্যের নলিকা নর্দমার মালিকানা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নিকট হস্তান্তর করা হয়।


তিনি আরও বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের পরের দিন থেকে এসব খাল, বক্স কালভার্ট ও নর্দমা হতে বর্জ্য অপসারণ, সীমানা নির্ধারণ ও দখল মুক্তি কার্যক্রম শুরু করি। এসব খাল, কালভার্ট ও নর্দমা হতে ২০২১ সালে ৮ লাখ ২২ হাজার মেট্রিক টন, ২০২২ সালে ৪ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন এবং চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য ও পলি অপসারণ করা হয়েছে।


মেয়র বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন শ্যামপুর, মান্ডা, জিরানী ও কালুনগর এই চার খালের বর্জ্য ও পলি অপসারণ এবং খাল সংস্কার করে নান্দনিক পরিবেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৮৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া এই চারটি খালের নকশা, অঙ্কন ও জরিপ কাজ চলমান রয়েছে। একইসাথে এসব খাল হতে বর্জ্য অপসারণ ও ভূমি উন্নয়নের লক্ষ্যে দরপত্র কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।


তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর ওপর থেকে চাপ কমাতে সায়েদাবাদ টার্মিনালে আর আন্তঃজেলার কোনো বাস ঢুকতে দেওয়া হবে না।


আন্তঃজেলা বাসের চাপ কমাতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে কাঁচপুরে আমরা টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু করেছি। এটি সম্পন্ন হলে বাইরে থেকে আসা বাস আর মূল ঢাকায় ঢুকতে পারবে না। ইতোমধ্যে আমাদের ভূমি উন্নয়নের কাজ চলমান আছে।


সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে তাপস বলেন, ঢাকার ভেতরে যেসব বাস চলবে তা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে রাখা হবে। এজন্য এ বাস টার্মিনালের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও পুরো টার্মিনালকে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে আমাদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।


তিনি আরও বলেন, আধুনিকায়নের ফলে বাস ব্যবস্থাপনায় যেমন গতি বৃদ্ধি পাবে, তেমনি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যাত্রীসেবার মান ও নিরাপত্তা আরও বেড়ে যাবে। চালক-সহযোগীদের জন্য আবাসন সুবিধা দিতে ডরমিটরি নির্মাণের কাজও গ্রহণ করা হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে কাউন্টারের সংখ্যা।


বিবার্তা/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com