শিরোনাম
নীলফামারীতে ব্রীজ আছে সড়ক নেই
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০১৬, ১০:২৩
নীলফামারীতে ব্রীজ আছে সড়ক নেই
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বুল্লাই নদীর বসুনিয়াপাড়া খালের উপর দীর্ঘদিন ধরে একটি সেতু দাবি করে আসছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রনচন্ডি ইউনিয়নের বসুনিয়াপাড়া ও রনচন্ডি গ্রামের হাজারো মানুষ। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তারা সেতু না পাওয়ায় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ ওই উপজেলায় প্রায় দুই কোটি দুই লাখ ৭৪ হাজার ৬৭০ টাকা ব্যয়ে সাতটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে ওই সেতু যে সব স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে সে সব স্থানে নেই রাস্তাঘাট বা মানুষজন চলাচলের কোনো পথ।


সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গ্রামীণ রাস্তায় ১২ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সাতটি সেতু নির্মাণ করা হলেও সেতুগুলো জনসাধারণের কোনো উপকারে আসছে না। যে সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো জনবসতিহীন ফাঁকা স্থানে পড়ে আছে। নেই কোনো চলাচলের সংযোগ সড়ক বা পথ। পাশাপাশি এতো নিম্নমানের কাজ করা হয়েছে যে এই সেতুগুলোর উপরিভাগের সব কিছু খসে পড়তে শুরু করেছে।


ঠিকাদারদের চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হয়েছে বহু আগেই। অথচ উপজেলার বসুনিয়াপাড়ার বুল্লাই নদীর খালের সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ও শিক্ষার্থীরা চলাচল করছে বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে। এলাকাবাসী সেখানে দীর্ঘদিন ধরে সেতুর দাবি জানিয়ে আসলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।


জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামারপাড়া হতে ইসমাইল পাড়া যাওয়ার রাস্তায় ইসমাইলের দোলায় ৪০ ফুট সেতু ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকায় মেসার্স মিনারা এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। সেখানে চলাচলের কোনো রাস্তা নেই। এমন আরো ছয়টি সেতুর মধ্যে মাগুড়া ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টারপাড়া নিজাম উদ্দিনের বাড়ির পূর্বদিকে বুল্লাই নদীর উপরে ৪০ ফুট সেতু নির্মাণ করা হয় ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকায়। পুটিমারী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের ভেড়ভেড়ি গ্রামের সালামের মোড় হতে সাতপাই যাওয়ার রাস্তায় জমসের মাস্টারের বাড়ির সামনে ৪০ ফুট সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকা। আবার বাহাগিলী ইউনিয়নের নয়ালখাল ডাঙ্গারহাটে ধনীর উদ্দিন বাড়ির পশ্চিমে ৩৪ ফুট সেতু নির্মাণ করা হয় ২৭লাখ ৯৪ হাজার ২৫৬ টাকায়। নিতাই ইউনিয়নের ইউপি পরিষদ হতে খাতা মধুপুর ইউনিয়ন যাওয়ার রাস্তায় শিষারতলী যাওয়ার দোলার পানি নিষ্কাশনের জন্য ৩৪ ফুট সেতু নির্মাণ করা হয় ২৭ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৬ টাকায়। মাগুড়া ইউনিয়নের কামারের হাটে বুল্লাই নদীর উপর ৪০ ফুট সেতু ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকায় নির্মাণ করা হয়।


নিতাই ইউনিয়নের পানিয়ালপুকুর গুয়াপাড়া ত্রিপুতি হতে মুশরত পানিয়াল পুকুর বেলতলী রাস্তায় গেন্দুর বাড়ির সামনে ডাঙ্গায় ২০ ফুট সেতু নির্মাণ করা হয় ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৬ টাকায়। সাতটি সেতু নির্মাণে সর্বমোট ব্যয় দেখানো হয় দুই কোটি দুই লাখ ৭৪ হাজার ৬৭০ টাকা।


এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জলঢাকা উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ওই সব সেতু নির্মাণের প্রকল্প ও চূড়ান্ত বিল প্রসঙ্গে আমার কিছু জানা নেই। এখানে পূর্বে দায়িত্বে থাকা সাইফুল ইসলাম চাকরি হতে অবসর করে চলে গেছেন। তিনি এই সব সেতুর বিষয় তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান।


বিবার্তা/সুমন/জেমি/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com