
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কোটি টাকা মূল্যের ৪১টি মহিষ লুট করা মামলায় সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সাইদুর রহমান সহ ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
১৩ এপ্রিল, রোববার কুষ্টিয়া আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোস্তফা পারভেজ।
কারাগারে পাঠানো ১১ জন বিএনপি দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন, দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির আহŸায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান, পলাশ, জাকির, বকুল, অভিক, বক্কর, মোজাফফর, হানা, তককুল, তুহিন ও শাহিনুর। এরা সকলেই বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতা-কর্মী এবং এদের বাড়ি দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর গ্রামে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর মন্ডলপাড়া গ্রামের সাইদ মন্ডলের মহিষের বাথানের রাখালদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও মারপিট করে পদ্মার চরের বাথান বাড়ি থেকে ৪১টি মহিষ লুট করে। মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও মরিচা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে তার লোকজন মহিষগুলো লুট করে।
এ সময় তারা মহিষের রাখাল মাজদার আলী (৫০), কামাল হোসেন (৩৫) ও সৈকতকে (৩৫) অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী রহিমপুর মাঠে নিয়ে আটকে রাখে। মহিষ লুটের ঘটনা ও রাখালদের অপহরণের খবর পেয়ে পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাখালদের উদ্ধার করে। তবে লুট হওয়া মহিষ সেসময় উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। মহিষগুলো লুট করার পরপরই ট্রক ভর্তি করে অন্যত্র পাচার ও বিক্রি করে দেন বিএনপি নেতা সাইদুর চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। লুট হওয়া ৪১টি মহিষের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৯ লাখ টাকা।
এ ঘটনায় মহিষের বাথান মালিক সাইদ মন্ডলের স্ত্রী তমা খাতুন ১৪ ফেব্রুয়ারি দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির ভ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও মামলায় ৮/১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। ওই মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালতের বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
আদালত পুলিশের কর্মকর্তা ও দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হুদা ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, ৪১টি মহিষ লুট মামলায় ১২ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে। তারা জামিন চাইলে ১১ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন আদালতের বিচারক। এসময় এক আসামিকে জামিন দেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচর ভাঙ্গাপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম প্রামানিকের ছেলে রাজু (১৮) নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পদ্মার চরে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে ভোররাতে একই এলাকার সাঈদ মন্ডলের চরের বাথান থেকে ৪১টি মহিষ লুট করে সাইদুর চেয়ারম্যান ও তার লোকজন।
বিবার্তা/শরীফুল/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]