
মেরুদণ্ডের দুটি কশেরুকার মধ্যে যে ফাঁকা জায়গা থাকে, সেখানে এক ধরনের ডিস্ক বা জেলির মতো বস্তু থাকে। এই সন্ধিস্থলকে ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক বলা হয়। এই ডিস্ক যখন তার জায়গা থেকে সরে যায়, তখন তাকে ডিস্ক প্রলেপস বলে। ডিস্ক প্রলেপস ঘাড় বা সারভাইক্যাল স্পাইন ও কোমর বা লাম্বার স্পাইনে বেশি হয়। ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই এ রোগে অধিক হারে ভোগেন।
ডিস্ক প্রলেপসের লক্ষণ
১. ব্যথা ঘাড় থেকে হাতের দিকে নামে, এমনকি হাতের আঙুলেও ব্যথা ছড়াতে পারে।
২. হাত ঝুলিয়ে রাখলে ও বিছানায় শুয়ে থাকলে ব্যথা বেশি অনুভূত হবে।
৩. হাত বা হাতের অংশবিশেষ ঝিনঝিন বোধ বা অনুভূতিহীন হয়ে পড়তে পারে।
৪. হাতের শক্তি কমে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে হাতের মাংসপেশি শুকিয়ে আসে।
৫. কোমর বা লাম্বার স্পাইন আক্রান্ত হলে।
৬. ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়ায়।
৭. পা ঝিনঝিন বা অনুভূতিহীন মনে হয়।
৮. খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা হাঁটলে আর হাঁটার ক্ষমতা থাকে না। পায়ের শক্তি কমে যায় এবং পায়ে মাংসপেশি শুকিয়ে যায়।
৯. অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রস্রাব ও পায়খানায় নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
ডিস্ক প্রলেপস যেভাবে নির্ণয় করা হয়
ডিস্ক প্রলেপস আছে কিনা, জানতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা করে থাকেন। পাশাপাশি স্পাইনের এক্স-রে এবং এমআরআই পরীক্ষার মাধ্যমে কোন লেভেলে কতটুকু ডিস্ক প্রলেপস হয়েছে, তা সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব।
চিকিৎসা
ব্যথার ওষুধ এবং প্রয়োজনে মাসল রিলাক্সেন্টের পাশাপাশি সম্পূর্ণ বিশ্রাম করতে হবে। রোগের অবস্থা অনুযায়ী দুই-চার সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি থেকে দিনে দু-তিনবার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিলে ও ফিজিওথেরাপিস্টের নির্দেশিত থেরাপিউটিক ব্যায়াম করলে রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন। সুস্থ হওয়ার পরও কিছু নিয়ম রোগীকে মেনে চলতে হবে। যেমন–
১. ঝুঁকে ভারী কাজ করা যাবে না।
২. ভারী ওজন তোলা যাবে না।
৩. ভ্রমণ ও হাঁটাচলার সময় লাম্বার করসেট ব্যবহার করতে হবে।
৪. কোষ্ঠকাঠিন্য এবং তীব্র হাঁচি-কাশি থাকলে তার চিকিৎসা করাতে হবে।
৫. ফিজিওথেরাপিস্টের নির্দেশিত ব্যায়াম করতে হবে। এরপরও যদি সমস্যার সমাধান না হয়, তখন সার্জন প্রলেপস ঠিক করার জন্য সার্জারির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]