
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে দুর্গাপূজার বিসর্জনে কিছু সময় আনন্দ উৎসবে মেতেছিল দুই বাংলার মানুষ। বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের উপস্থিতিতে মাথাভাঙ্গা নদীর দুইপাড়ে বসেছিল দুই বাংলার মানুষের মিলন মেলা।
১৩ অক্টোবর, রবিবার বিকেলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে এ দৃশ্য দেখা যায়।
বিজয়া আনন্দে তারা আত্মীয়তার বন্ধনও করেছে অটুট। তবে সীমান্তরক্ষীদের কড়া নিরাপত্তার কারণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই পূজা বিসর্জন হলে শেষ হয় এ মিলন মেলার।
ওপারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শিকারপুর সীমান্ত আর এপারে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ সীমান্ত। মাঝখানের সরু মাথাভাঙ্গা নদী তার সীমানা। এ নদীর দুইপাড়ে দুর্গোৎসবের পূজা বিসর্জনে কাঁটাতারের সীমানা বিভেদ ভুলে দুই দেশের মানুষের মধ্যে কিছু সময়ের জন্য ঘটেছিল আনন্দ ও সোহার্দপূর্ণ মিলন। দেবী দূর্গাকে বিসর্জন দিতে এসে দুই পারের মানুষ সাঁতরিয়ে নদী পারাপার হয়ে সোহার্দ ও বন্ধনকে করেছে অটুট। সেই সাথে করেছে একে অপরকে মিষ্টি মুখ। তাদের মধ্যে হয়েছে কুশল বিনিময়। অশ্রু সজল নয়নে আত্মীয় স্বজনরা একে অপরকে বেঁধেছে মমতার বন্ধনে।
বছরে একটি উৎসবের অপেক্ষা। আর তা হলো দুর্গোৎসবের বিসর্জন। যারা আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দুই দেশে যাতায়াত করতে পারেন না তাদের অপেক্ষার অবসান হয় বিজয় দশমীর দুর্গার বিসর্জন ক্ষণে। দুপুর হতে না হতেই ব্যাকুল হয়ে থাকা মানুষগুলো ছুটে যান মাথাভাঙ্গা নদীপাড়ে আপনজনের দেখা পেতে। অশ্রুসজল নয়নে দূরদৃষ্টি দিয়ে দেখতে থাকেন এপার ও ওপারে থাকা আপনজনদের। দীর্ঘদিন পর একপলক দেখা পেতেই মিলে মনের শান্তি। ফিরে স্বস্তি এমনটা জানিয়েছেন আশরাফুল ইসলাম নামে এক স্কুল শিক্ষক। তিনি প্রতিবছরই এভাবে ওপারের স্বজনদের সাথে দেখা করতে ছুটে যান ধর্মদহ সীমান্তে।
দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি-বিএসএফ’র কড়া নজরদারি থাকলেও কিছু সময়ের জন্য তারাও সীমানা নজরদারি ভুলে নদীর দুইপাড়ে থাকা বাঙালিদের সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে সহায়তা করে থাকেন। তবে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই পূজার বিসর্জন শেষ হয়। সেইসাথে শেষ হয় সম্প্রীতি ও সোহার্দের মিলন। অপেক্ষা আরও একটি বছর।
এদিকে সারা দেশের ন্যায় কুষ্টিয়াতে ১৩ অক্টোবর (রবিবার) বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। কড়া নিরাপত্তায় বিকেল ৪টার পর থেকে দেবী দুর্গাসহ প্রতিমাগুলো নেওয়া হয় পদ্মা, গড়াই ও মাথাভাঙ্গা নদীসহ বিভিন্ন স্থানে। কুষ্টিয়া শহরের দুর্গাপূজার বিসর্জন হয় গড়াই নদীতে। কুষ্টিয়ায় এবছর ২২৪টি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় শারদীয় দুর্গোৎসব। কুষ্টিয়ায় প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষ্যে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে প্রশাসন।
বিবার্তা/শরীফুল/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]