বন্ধুত্বের টানে ২১ বছর পর বিদ্যালয়ে
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৩, ২৩:২২
বন্ধুত্বের টানে ২১ বছর পর বিদ্যালয়ে
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বন্ধু শব্দটা ছোট হলেও এর পরিধি এতোটাই বিস্তৃত যে পরিমাপ করার সাধ্য কারো নেই। তারপরেও ছোট পরিসরে বলতে গেলে বন্ধু মানে আত্মার টান, ভালোবাসার বন্ধন, হৃদয়ের স্পর্শ, একে অন্যের ছায়া, শেষ ভরসার জায়গা। ভার্চ্যুয়াল জগতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বন্ধুত্বের যেমন কম কদর থাকে, তেমনি সম্পর্কটা হয় অনেকটাই লোক দেখানো। কিন্তু বাস্তব জীবনের বন্ধু হয় স্বার্থহীন। সেই নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের জন্য ২১ বছর পর মিলিত হলেন ঐতিহ্যবাহী রসুলপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০১-২০০২ সালের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।


১৬ জুলাই, রোববার সকাল থেকেই নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে উৎসবে-আনন্দে মেতে ওঠেন তারা। পুরোনো শিক্ষার্থীদের পেয়ে খুশি শিক্ষকরাও।


স্মৃতিচারণ করেন স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও রবি আজিয়াতা বাংলাদেশ লিমিটেডের টেকনিক্যাল প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. মাকসুদুল হাসান সোহাগ।


তিনি বলেন, স্কুলের দিনগুলি সবার কাছেই মধুর একটা স্মৃতি। ফেলে যাওয়া স্কুলে এসে সেই স্মৃতিকেই আবার ফিরে দেখতে চাই আমরা। সবাই এক হওয়ার আনন্দটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।


স্ত্রী সুমাইয়া ইসলাম ও সন্তান র‍াইয়ানকে নিয়ে পুনর্মিলনীতে এসেছেন তানভীর রহমান হীরা। বর্তমানে তিনি মেট্রোরেলের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। স্কুলজীবনের বন্ধুদের কাছে পেয়ে তিনি বললেন, একসঙ্গে পুরোনো বন্ধুদের দেখে খুব ভালো লাগছে। সবার সঙ্গে আড্ডা দিয়ে মন ভরে গেল। কিছুসময়ের জন্য হলেও সেই পুরোনো দিনে ফিরে গেছি।


মোছা. মাকসুদা খাতুন বলেন, সেই কবেকার কথা। আমাদের সেই আড্ডার মাঠ, গল্পের কথাগুলো মনে পড়ে গেল। আজ অনেক বন্ধুকে পেয়েছি। পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে একত্রিত হতে পারব, তা কখনো চিন্তা করিনি। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা তানভীর, সাজ্জাদ রহমান, স্বদেব চন্দ্র সূত্রধর, সোহাগ, জাহাঙ্গীরসহ যারা এমন একটি সুন্দর দিন উপহার দিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না। তবে এ রকম অনুষ্ঠান যাতে ভবিষ্যতে হয়, সেই প্রত্যাশা করি।


একটি বেসরকারি কোম্পানির সেক্রেটারি ও হেড অব ব্যাংকিংয়ের সাজ্জাদ রহমান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট স্বদেব চন্দ্র সূত্রধর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও হোমিও চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলমের কাছে অনুভূতি জানতে চাইলে তারা বলেন, এ অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। ফেসবুকে মোটামুটি সবার সঙ্গে যোগাযোগ হয়, কিন্তু সময়ের অভাবে আমরা কেউ সরাসরি একত্রিত পারিনি। পুনর্মিলনীতে সেই সুযোগটা পেয়েছি। ভালো লাগছে দীর্ঘ ২১ বছর পরে সবাই একত্রিত হতে পেরেছি।


নওগাঁ জেলায় পুলিশের এএসআই পদে কর্মরত রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি উপেক্ষা করে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা ও আড্ডা দেওয়ার জন্য পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।


স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ সরকার মো. ফজলুল করিমের সভাপতিত্বে সকাল ১০টায় স্কুল মাঠে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভা শুরু হয়।


পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে রসুলপুর গ্রামের তিন কৃতি সন্তান আহছানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর মো. মিজানুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম ও ডিজিএম পল্লী বিদ্যুতের বিপ্লব কুমারসহ সাবেক ও বর্তমান ২২ জন শিক্ষককে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছাকমান আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমি সুপারভাইজার আনন্দ কুমার মণ্ডল প্রমুখ।


বিবার্তা/মারুফ/রোমেল

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com