চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা আজও ৪৩ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই
প্রকাশ : ০১ মে ২০২৪, ১৫:২৫
চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা আজও ৪৩ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে টানা তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। এপ্রিলের শেষে মে মাসের প্রথম দিন বুধবারও অতি তীব্র তাপপ্রবাহে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গাবাসীর জনজীবন।


এদিন চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সকাল ৯ টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, একই সময়ে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৩ শতাংশ।


দুপুর ১২ টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১২ শতাংশ। আর বিকেল ৩ টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১২ শতাংশ।


তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে থমকে গেছে জনজীবন। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে চরম অস্বস্তি নেমে এসেছে। উচ্চবিত্তরা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে এবং গ্রামাঞ্চলের নিম্নবিত্তরা বাড়ির পাশের বাগানে বসে কিছুটা স্বস্তি পেলেও মধ্যবিত্তরা পড়েছেন চরম বিপাকে।


আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গেল এপ্রিলের ৩০ দিনের মধ্যে অন্তত ১৩ দিনই চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত পাঁচ দিন অতি তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল।


চুয়াডাঙ্গায় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার প্রতিষ্ঠার পর থেকে গতকাল মঙ্গলবার ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এপ্রিলের শেষ দিনে আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটায় প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চুয়াডাঙ্গার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি।


জানা গেছে, ২০০২ সাল থেকে চুয়াডাঙ্গায় বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়। এর মধ্যে ২০০২ সালের (২০ মে) ৪০ দশমিক ২, ২০০৩ সালের (২৮ মে) ৪০ দশমিক ৮, ২০০৪ সালে (১৩ মে) ৪২ দশমিক ৪, ২০০৫ সালের (২ জুন) ৪৩ ডিগ্রি, ২০০৬ সালের (৩০ এপ্রিল) ৩৯ দশমিক ২, ২০০৭ সালের (৩১ মে) ৩৯ দশমিক ৫, ২০০৮ সালের (২২ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৩, ২০০৯ সালের (২৭ এপ্রিল) ৪১ দশমিক ৮, ২০১০ সালের (১০ এপ্রিল) ৪১ দশমিক ৫, ২০১১ সালের (১০ জুন) ৩৮ দশমিক ৪, ২০১২ সালের (৪ জুন) ৪২ দশমিক ৯, ২০১৩ সালের (৯ এপ্রিল) ৪১ দশমিক ৫, ২০১৪ সালের (২১ মে) ৪৩ দশমিক ২, ২০১৫ সালের (২২ মে) ৩৯ দশমিক ৮, ২০১৬ সালের (১১ ও ২২ এপ্রিল) ৩৯ দশমিক ২, ২০১৭ সালের (৩ এপ্রিল) ৩৮ দশমিক ৫, ২০১৮ সালের (১৮ জুন) ৩৯ দশমিক ৭, ২০১৯ সালের (২৮ এপ্রিল) ৩৯ দশমিক ৪, ২০২০ সালের (৭ এপ্রিল) ৩৯ দশমিক ২, ২০২১ সালের (২৫ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৫ ও ২০২২ সালের (২৪ ও ২৫ এপ্রিল) ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।


এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ৪০০ জনের কাছাকাছি রোগী ভর্তি আছেন। অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গুরুতর অসুস্থ রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।


হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আতাউর রহমান মুন্সী বলেন, চুয়াডাঙ্গাবাসী অতীতে কখনো এমন সংকটকালীন পরিস্থিতির মুখোমুখি হননি। তাই সবাইকে স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনে চলতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। ঢিলেঢালা পোশাক ও ছাতা মাথায় দিয়ে বের হতে হবে। ভাজা-পোড়া ও সব ধরনের কোমল পানীয় থেকে দূরে থাকতে হবে। প্রচুর পানি খেতে হবে।


চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। এটি আরও দু-এক দিন থাকতে পারে। এরপর তাপপ্রবাহ কমতে শুরু করবে। আগামী ৫ মে ভোরে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ৬-৭ মে থেকে তাপপ্রবাহ থাকবে না।


বিবার্তা/আসিম/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com