পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৩, ১৫:২৭
পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

পরকীয়া করে চাচাতো ভাইয়ের সাথে পালিয়ে সংসার শুরু করায় স্ত্রী শহর বানুকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী মো. খোকন শেখকে (৪৯)) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। একইসাথে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড রায় দেওয়া হয়।


সোমবার (১৫ মে) দুপুর ১২ টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত খোকন আদালতে উপস্থিত ছিল। গ্রেপ্তারের পর থেকে সে কারাগারে ছিল।


হত্যা মামলার বাদী হলেন বিবাদীর ছেলে মো. সাইদুল ইসলাম (২৮)। তারা বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের মানিক দাইড় গ্রামের বাসিন্দা।


২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেডিয়ামের পাশের একটি ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী শহর বানুকে চুরিকাঘাত করে হত্যা করে স্বামী খোকন শেখ।


মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, বগুড়ার বাসিন্দা খোকন শেখ স্ত্রী শহর বানু এবং তিন ছেলেকে নিয়ে গাজীপুরের তুরাগের ভাবনার টেক এলাকায় ভাড়া থাকতেন। সেখানে তিনি ব্যবসা করতেন। তার চাচাতো ভাই ফরিদ ওই বাসায় আসাযাওয়া করতো। সে সুবাদে খোকনের স্ত্রী শহর বানুর সাথে তার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রায় ২৫ দিন আগে শহর বানু এবং ফকির শেখ পালিয়ে লক্ষ্মীপুরে চলে আসে। স্টেডিয়ামের পাশে সিরাজ মিয়ার বাড়িতে ভাড়া উঠে সেখানে সংসার শুরু করেন। ফকির ভাঙ্গারী মালামালের ব্যবসা করতো। এ ঘটনার প্রায় ১৫ দিন পর শহর বানুর স্বামী খোকন তাদেরকে খুঁজতে লক্ষ্মীপুরের ওই বাসায় আসে। স্ত্রীকে তার সাথে চলে যেতে অনুরোধ করে খোকন। কিন্তু শহর বানু খোকনকে জানিয়ে দেয়- তাকে তালাক দিয়ে ফকির শেখকে বিয়ে করেছে সে। স্ত্রীকে নিয়ে যেতে না পেরে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায় খোকন। কয়েকদিন পর সে আবারও স্ত্রীকে নিয়ে যেতে আসে। তখন শহর বানু ওইঘরে একাই ছিল। স্ত্রী যেতে রাজি না হওয়ায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে খোকন শেখ ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী শহর বানুকে ধারালো চুরি দিয়ে উপর্যুপুরি আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।


স্থানীয় লোকজন খোকন শেখকে রক্তমাখা কাপড়ে ওই বাসা থেকে বের হয়ে যেতে দেখেন। পরে ঘটনাস্থলের প্রায় দুই কিলোমিটার দূরের দক্ষিণ মজুপুর গ্রাম থেকে তাকে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ ভিকটিমকে মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।


এ ঘটনার পরদিন তাদের বড় ছেলে সাইদুল ইসলাম বাদি হয়ে পিতাকে আসামী করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ খোকনেকে আদালতে সোপর্দ করলে সে আদালতে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।


শহর পুলিশ ফাঁড়ির (পরিদর্শক) ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম হত্যা মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার এক মাসের মাথায় আদলতে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এতে খোকন শেখকে অভিযুক্ত করা হয়।


আদালত আসামীর স্বীকারোক্তি, তদন্ত প্রতিবেদন এবং সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে খোকন শেখকে দোষী সাবস্ত করে ঘটনার ১৩ মাসের মাথায় এ মামালায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন।


জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


বিবার্তা/সুমন/এনএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com