মেজরের ফার্ম দখলের পায়তারা জবরদখলকারীদের
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ২১:৪৬
মেজরের ফার্ম দখলের পায়তারা জবরদখলকারীদের
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ঝাঁড়গাতে মেজর সাখাওয়াৎ হোসেনের মাল্টিপারপাস কৃষি ফার্মের (মেজরের ফার্ম) জমি দখল করে রাতারাতি গীর্জা নির্মাণসহ প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে চলেছে জবরদখলকারী স্থানীয় কিছু লোকজন।


মেজরের সন্তানেরা ঢাকায় থাকার সুবাদে তার মাল্টিপারপাস কৃষি ফার্মের জমি অবৈধভাবে দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় অসাধুচক্র। এদিকে মেজরের জমি রক্ষনাবেক্ষণকারীদের উপর মাঝেমধ্যে হামলা করে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে চক্রটি। জমিসংক্রান্ত বিষয়ে মারপিটের ঘটনায় ওই চক্রটি এখন পর্যন্ত ১৮টি মামলা দায়ের করেছেন। তাদের এসব মিথ্যা মামলা-মোকদ্দমায় সহায়তা করছে শহরের একটি সুবিধাভোগী মহল। এই মহলের ইন্ধনেই এসব ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন ফার্মের কেয়ারটেকার মো. আতিকুর রহমান।


ফার্মের কেয়ারটেকার মো. আতিকুর রহমান বিবার্তাকে জানান, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দোগাছি গ্রামে মেজরের ফার্মের জমির পরিমাণ ১২৪ শতক, যা তিনি দেখাশোনা করে আসছেন। কিন্তু স্থানীয় একই পরিবারের ৫ জন- ফাদার বিদ্যা (৪০), শ্রী সুরেশ (৪৫), নরেশ (২৮), শ্রী উলেন (৩৫), শ্রী প্রফুল্ল (৪০) ও চতুরা খোর পাঠানপাড়া গ্রামের হাফিজের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৫) মেজরের জমি নিজেদের দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে দখলের পায়তারা করে আসছে। এমনকি জমি দখলে নিতে সেখানে রাতারাতি একটি গীর্জা নির্মাণ করা হয়।


কেয়ারটেকার আরও বলেন, 'সম্প্রতি জবরদখলকারী আমিসহ মেজরের ফার্মে নিয়োজিত কর্মচারীদের উপর রামদা এবং দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করে। এঘটনায় গত ১৮ মার্চ আমি বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানায় একটি মামলা দায়ের করি। জবরদখলকারী এতোটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তারা আইন-কানুন কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না, বরং থানা পুলিশ গেলে তাদের উপরও চড়াও হয়। অপরদিকে ফাদার বিদ্যা ও নজরুল ইসলাম গং আমাদের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করছে। সকল মামলাবাজ ও জমি জবরদখলকারিদের গ্রেফতারসহ ন্যায় বিচারের দাবি জানাই।'


এ বিষয়ে মরহুম মেজর সাখাওয়াৎ হোসেনের ছেলে নাবিদ বিন সাখাওয়াৎ বিবার্তাকে জানান, আমার মরহুম বাবা গত ১৯৯৮ সালে বালিয়াডাঙ্গী থানার দোগাছি মৌজার সাবেক ফুড কন্ট্রোলার আব্দুস সাত্তার ও সাবেক হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশনের মহা-ব্যবস্থাপক আফরুজা নাহার গুল এবং এলাকার অন্যান্য লোকজনদের থেকে জমি কিনে কৃষি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ফাদার বিদ্যা বর্মন ও নজরুল ইসলাম গং আমাদের ফার্মের দাগ নং-৭৬২৯, ৭৬৩১, ৭৬৬০ ও ৭৬৬৭ জমি দখলে নেয়। পরবর্তীতে তারা বালিয়াডাঙ্গী সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মোকদ্দমা নং-৩১৭/২০২১-যা গত ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক খারিজ হয়ে যায়। এতেই প্রমাণিত হয় যে এই জমিতে তাদের কোন প্রকার অধিকার নেই।


তিনি আরও জানান, বিবাদীগণ মামলায় হেরে যাওয়ার পর নতুন কৌশল হিসেবে তারা আমাদের জমিতে গির্জা নির্মাণ করেন, যা ধর্মকে ব্যবহার করে জমি দখল করার একটি ন্যাক্কারজনক কুট-কৌশল। এছাড়াও তারা বিভিন্ন সময় আমাদের জমি দেখাশোনায় কর্মরত লোকদের মারপিট করছে এবং প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে। আমি জমি জবরদখলকারিদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।


এদিকে দখলদার ও গির্জা নিমার্ণকারী ফাদার শ্রী বিদ্যা বর্মন বিবার্তাকে জানান, পরিবারের লোকজন আমাদের বংশানুক্রমে টিকা বর্মনের রেকর্ডভূক্ত জমিতে চাষাবাদ ও গির্জা ঘরটি নির্মাণ করেছি।


নজরুল ইসলাম নামে আরেক দখলদার বিবার্তাকে জানান, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এই জমি আমার দাদা কেরামত আলীর নামে রেকর্ড ও দলিলসূত্রে মালিকানা প্রাপ্ত।


এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি খায়রুল আনাম ডন জানান, উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের দোগাছি এলাকায় অবস্থিত কৃষি ফার্মের মালিকানা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। জমির মালিকানার বৈধ কাগজপত্র যাদের রয়েছে তাদের পাশে রয়েছে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ। এখানে কোন পক্ষ যদি আইন-শৃংখলা ভঙ্গের চেষ্টা করে, তাহলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।



বিবার্তা/বিধান/মোবারক/এনএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com